Breaking

Monday, September 13, 2021

WBBSE Class 6 history chapter 3 question answer

wbbse class 6 history chapter 3 questin answer

WBBSE Class 6 history chapter 3 question answer

WBBSE Class 6 history chapter 3 question answer

ষষ্ঠ শ্রেনীর ইতিহাসের বিবৃতি মুলক প্রশ্নোত্তর

Here I share with you wbbse Class 6 history chapter 3 question answer. Class 6 history chapter 3 civilization question answers. Class 6 history chapter 3 questions and answers. History chapter 3 class 6 easily described questions answers.


ষষ্ঠ শ্রেনীর ইতিহাসের বিবৃতি মুলক প্রশ্নোত্তর

প্রশ্নঃ - মেহেরগড় কোথায়  অবস্থিত ? মেহেরগড় সভ্যতা কে আবিষ্কার করেন ?
উত্তরঃ - বর্তমান পাকিস্তানের বেলুচিস্তানের বোলান গিরিপথের থেকে খানিক দূরে অবস্থিত। মেহেরগড় সভ্যতা আবিষ্কার করেন ফরাসি প্রত্নতাত্বিক জাঁ ফ্রাঁসোয়া জারিজ ১৯৭৪ খ্রিস্টাব্দে আবিষ্কার করেন। 

প্রশ্নঃ - হরপ্পা সভ্যতা প্রায়-ঐতিহাসিক যুগের সভ্যতা ব্যাখ্যা করো ?
উত্তরঃ - হরপ্পা সভ্যতা প্রায়-ঐতিহাসিক যুগের সভ্যতা। কারণ হরপ্পার লোকেরা লিখতে জানত। কিন্তু সেই লেখা আজও পড়া যায়নি। তাই প্রত্নবস্তুর উপর ভিত্তি করেই সভ্যতার ইতিহাস জানতে হয়। এই সভ্যতার মানুষ তামা ও ব্রোঞ্জ ধাতুর ব্যবহার জানত। সেইজন্য থেকে তামা ও ব্রোঞ্জ যুগের সভ্যতাও বলা হয়। তামা-ব্রোঞ্জ যুগের সভ্যতাগুলোর মধ্যে হরপ্পা সভ্যতাগুলির মধ্যে হরপ্পা সভ্যতাই সবথেকে বড়ো। খ্রিস্টপূর্ব ২৬০০ থেকে খ্রিস্টপূর্ব ১৮০০ অব্দ পর্যন্ত হরপ্পা সভ্যতার উন্নতির সময় ধরা হয়। 

প্রশ্নঃ - হরপ্পা সভ্যতা কতদূর পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল ?
উত্তরঃ - উত্তরে আফগানিস্তান থেকে দক্ষিণে গুজরাট, কচ্ছ ও মহারাষ্ট্রের দৈমাবাদ  অঞ্চল এবং পূর্বে আলমগিরপুর থেকে পশ্চিমে পাকিস্তানের বালুচিস্তান পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। 

প্রশ্নঃ - হরপ্পা সভ্যতার নগর পরিকণ্পনার বিবরণ দাও ?
উত্তরঃ - হরপ্পা সভ্যতার নগর পরিকল্পনা 

  • সূচনা :-  ভারতীয় উপমহাদেশে হরপ্পা সভ্যতাতেই প্রথম নগর গড়ে উঠেছিল।তাই একে প্রথম নগরায়ন বলা হয়। মহেঞ্জোদাড়ো ও হরপ্পা ছিল সবচেয়ে বড়ো দুটি নগর। হরপ্পা , মহেঞ্জোদাড়ো , চানহূদরো , লোথাল , কালিবঙ্গান প্রভৃতি নগরগুলির ধ্বংসাবশেষ থেকে এই সভ্যতার নগরায়নের পরিকল্পনার ধারণা পাওয়া যায়। 
  • অঞ্চল :- হরপ্পার নগরগুলিতে বসতি অঞ্চল দুটি স্পষ্ট ও আলাদা এলাকায় ভাগ করা ছিল। শহরে মাঝখানে একটি আয়তাকার উঁচু ঢিবি থাকত প্রত্নতাত্বিকরা তাকে বলেন সিটাডেল। নগরের প্রধান বসতি এলাকাটি থাকত নিচু অঞ্চলে। ঐ অঞ্চলে ইমারতগুলিকে মধ্যে বেশিরভাগই বসত বাড়ি। উঁচু এলাকাটি প্রায়শই নগরের উত্তর বা উত্তর-পশ্চিম দিকে থাকতো। নিচু বসতি এলাকাটা থাকত পূর্ব বা দক্ষিণ-পূর্ব অংশে। 
  • রাস্তা-ঘাট :- শহরের নিচু এলাকায় যাতায়াতের উপযোগী হরপ্পায় বেশ কয়েকটি চওড়া , পাকা রাস্তা দেখা যেত। ওই রাস্তাগুলো সাধারণত উত্তর - দক্ষিণ দিকে বিস্তৃত ছিল। তুলনায় কম চওড়া রাস্তা ও সরু গলিগুলো ছিল পূর্ব - পশ্চিমে। পথঘাট এরকম পরিকল্পনার জন্য নগরগুলো আকারে চৌকো হত। 

  • ঘর-বাড়ি :- নগরের নিচে থাকতো মূল বসতিগুলি। বাড়িগুলির নানারকম আকার দেখা যায়। বসত বাড়িগুলিতে বেশ কিছু ঘর থাকলেও রান্নাঘর থাকত একটি।ছোট  বাড়িগুলি দেখে মনে হয় সেগুলিতে গরিব মানুষেরা বসবাস করত। এর থেকে অনুমান করা হয় হরপ্পার নগর জীবনে ধনী - গরিব ভেদাভেদ ছিল। 

  • পয়ঃপ্রণালী :- হরপ্পা সভ্যতার নগর জীবনে একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক ছিল শৌচাগার। হরপ্পার প্রতিটি বাড়িতে শৌচাগার ছিল। পাকা নর্দমা দিয়ে জল নিকাশি ব্যবস্থাও ছিল। বড়ো নর্দমাগুলি ঢাকা থাকত। প্রতিটি বাড়ি থেকে ছোটো নালা গিয়ে মিশত বড়ো নর্দমাগুলোয়। উন্নত নগর শাসনের নমুনা ছিল এই নিকাশি ব্যবস্থা। 
  • স্নানাগার :- মহেঞ্জোদাড়োতে উঁচু এলাকায় একটি বড়ো জলাধার ছিল। সেটি পাকা পোড়ানো ইটের তৈরি। বোধহয় স্নান করার জন্য এটি ব্যবহার করা হতো। আয়তাকার জলাধারটিতে ওঠানামার জন্য সিঁড়ির ধাপও ছিল। জলাশয়টিতে বাইরের জল ঢোকা বন্ধ করা হয়েছিল। আবার অতিরিক্ত জল বার করে দেওয়া যেত। জল পরিষ্কার করার ব্যবস্থাও ছিল। 
  • শস্যগার :- হরপ্পা সভ্যতার নগর জীবনে খাদ্যশস্য মজুত রাখার বিশেষ গুরুত্ব ছিল। মহেঞ্জোদাড়ো ও হরপ্পায় খাদ্যশস্য মজুত রাখার জন্য দুটি বড়ো জায়গা ছিল। সেগুলি অনেকটা পাকা ইটের তৈরি বাড়ির মতো। হরপ্পায় শস্য রাখার বাড়িটির ভেতর ছিল দুটি সারিতে ভাগ করা মোট বারোটি তাক। সেখানে হাওয়া চলাচলের জন্য খুলাখুলিও ছিল। ফলে খাদ্যশস্য শুকনো ও তাজা রাখা সম্ভব হতো। তাছাড়া শস্য ঝাড়াই - বাছাইয়ের ব্যবস্থাও ছিল। 
  • নির্মাণশৈলী :- হরপ্পার ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট ও পয়ঃপ্রণালী ব্যবস্থা সবকিছুতেই সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনার ছাপ ছিল , যা আধুনিক নগরের সঙ্গে তুলনীয়। হরপ্পা সভ্যতার নির্মাণশৈলীর মধ্যে শৌচাগার ও স্নানাগার দেখে মনে হয় যে নগরগুলি ছিল যথেষ্ট পরিষ্কার। 
  • উপসংহার :- হরপ্পা সভ্যতার নগর পরিকল্পনা আধুনিক যুগের মতোই উন্নত ও বৈচিত্র্যপূর্ণ ছিল। সুষ্ঠ নাগরিক পরিকল্পনা নগরবাসীকে সুখস্বাচ্ছন্দময় জীবনযাত্রা উপহার দিয়েছিল। 

প্রশ্নঃ - হরপ্পা সভ্যতার কারিগরি শিল্প সম্পর্কে কি জান লেখ ?
উত্তরঃ - হরপ্পা সভ্যতার অর্থনীতির অন্যতম দিক ছিল কারিগরি শিল্প। পাথর, ধাতু, মাটির তৈরী জিনিসপত্র ব্যবহার করত হরপ্পা সভ্যতার মানুষ। ধাতুর মধ্যে তামা, কাঁসা ও ব্রোঞ্জের ব্যবহার হতো। লোহার ব্যবহার হরপ্পার মানুষ জানত। তামা ও কাঁসার  তৈরী ছুরি , কুঠার, বাটালি প্রভৃতি এবং মাটি ও ধাতুর বাসনপত্র বানানো হত। পাথরের ছুরি তৈরির কারখানা ও ছিল। 

    হরপ্পা সভ্যতার নানারকম মাটির পাত্র যেমন মাটির থালা, বাটি , রান্নার বাসন , জালা জাতীয় পাত্র তৈরী হতো। বেশিরভাগ পাত্র সাদামাটা, রোজকার ব্যবহারের জন্য। পাত্রগুলিকে পোড়ানো হত এবং কিছু পাত্রের গায়ে চকচকে লাল পালিশ লাগানো হত। সেগুলির গায়ে উজ্জ্বল কালো রঙের নকশাও আঁকা হত। এই পাত্রগুলিকে প্রত্নতাত্বিকেরা লাল-কালো মাটির পাত্র বলত। 

    হরপ্পা সভ্যতায় কাপড় বোনের কারিগরিও ছিল। কাপড়ে সুতোর কাজ করার শিল্পও হরপ্পা সভ্যতায় দেখা যায়। ইট বানানোর শিল্প এই সভ্যতার একটি গুরুত্বপূর্ণ কারিগরি দিক। কাদামাটির ইট ও চুল্লিতে পোড়ানো পাকা ইট - দুয়েরই  ব্যবহার দেখা যায়। তবে চুল্লিতে পোড়ানো পাকা ইট সম্ভবত জরুরি ইমারত বানানোর ক্ষেত্রে ব্যবহার হত।

    হরপ্পা সভ্যতায় মালার দানা বানানোর কারখানাও ছিল। এছাড়া সোনা,তামা, শাঁখ, দামি-কমদামি পাথর,হাতির দাঁত প্রভৃতি ব্যবহার হত। 

প্রশ্নঃ - হরপ্পা সভ্যতার ধর্ম সম্পর্কে কি জানা যায় লেখ ?
উত্তরঃ - হরপ্পার বিভিন্ন কেন্দ্রে অনেক পোড়ামাটির নারীমূর্তি পেয়েছেন।এর থেকে মনে হয় তারা মূর্তিপূজা করত। হরপ্পা সভ্যতায় মাতৃপূজার চল ছিল বলে মনে হয়। হরপ্পার মানুষ নানারকম জীবজন্তু ও গছপালার পূজা করত। একশিংওলা কাল্পনিক পশুর মূর্তির পূজা খুব বেশি হত। হরপ্পার সীলমোহরে ষাঁড়ের ছাপ থেকে মনে হয় ষাঁড়ের পূজাও হত। এছাড়াও অশ্বথ গাছ ও পাতার ছবি সিলমোহর ও মাটির পাত্রে দেখা যায়। অশ্বথ গাছকে দেবতা হিসেবে পুজো করা হতো বলে মনে হয়। 

প্রশ্নঃ - হরপ্পা সভ্যতার লিপি সম্পর্কে যা জানো লেখ ?
উত্তরঃ - হরপ্পার বাসিন্দারা লিখতে পারত। তাদের লিপি পাওয়া গেছে।  কিন্তু মুশকিল হলো , সেই লিপি আজ অবধি পড়া যায়নি। শুধু লিপির খানিকটা অনুমান করা যায়। হরপ্পার লিপি সাংকেতিক। তাতে ৩৭৫ থেকে ৪০০ তার মতো চিহ্ন রয়েছে। তবে হরপ্পার লিপিতে বর্ণমালা সম্ভবত ছিল না। এই লিপি লেখা হতো ডান নিক থেকে বাঁ -দিকে। লিপিতে ছোটো চিহ্নগুলি হয়তো সংখ্যা বোঝায়। অনুমান করা হয় দ্রাবিড় ভাষাগুলির সঙ্গে হরপ্পার ভাষার মিল ছিল। ঋক্বেদের ভাষাতেও দ্রাবিড়ীয় ভাষার প্রভাব লক্ষ করা যায়। পাত্র, সিলমোহর, তামার ফলক নানা কিছুর উপরেই হরপ্পার লিপি পাওয়া গেছে। 

আরও পড়ুনঃ

অধ্যায় ১ঃ ইতিহাসের ধারণা Click Here
অধ্যায় ২ঃ ভারতীয় উপমহাদেশে আদিম মানুষ Click Here
অধ্যায় ৩ঃ ভারতীয় উপমহাদেশের প্রাচীন ইতিহাসের ধারা Click Here
অধ্যায় ৪ঃ ভারতীয় উপমহাদেশের প্রাচীন ইতিহাসের ধারা ২ Click Here
অধ্যায় ৫ঃ খ্রিষ্টপূর্ব ষষ্ঠ শতকের ভারতীয় উপমহাদেহশ Click Here
অধ্যায় ৬ঃ সাম্রাজ্য বিস্তার ও শাসন Click Here
অধ্যায় ৭ঃ অর্থনীতি ও জীবনযাত্রা Click Here
অধ্যায় ৮ঃ প্রাচীন ভারতীয় উপমহাদেশের সংস্কৃতিচর্চা Click Here
অধ্যায় ৯ঃ ভারত সমকালীন বহির্বিশ্ব Click Here

No comments:

Post a Comment