WBBSE Class 6 history important question | Class 6 history chapter 1 Bengali
হ্যালো বন্ধুরা,
আজ তোমাদের জন্য নিয়ে এসেছি ক্লাস ৬ এর ইতিহাসের অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর। আশা
করছি এই প্রশ্নোত্তরগুলি তোমাদের খুবই উপকারে আসবে।
ক্লাস ৬ এর অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
1. ইতিহাসে খালি মানুষের কথায় থাকে কেন?
উত্তরঃ- ইতিহাসে শুধু মানুষের কথায় থাকে কারণ- মানুষ ছাড়া আর কেঊ যে পুরোনো দিনের
কথা জানতে চায় না। বাঘ-সিংহ, গোরু-ছাগলদের তো বাবার নাম, ঠাকুরদার নাম এইসব
জানতেও চায় না কেউ। মানুষের সেসব জানার দরকার হয়। তাই মানুষ্কে পুরোনো দিনের কথা
জানতে হয়।পুরোনো দিনের কথাই ইতিহাসের কথা। তাই ইতিহাসে বেশিরভাগ মানুষের কথাই
থাকে।
2. ইতিহাস বুঝতে গেলে আমাদের পরিবেশ ও ভূগোল জানতে হয় কেন?
উত্তরঃ- ইতিহাস বুঝতে গেলে আমাদের পরিবেশ ও ভূগোল জানা দরকার হয় কারণ- মানষের
কাজকর্মই তো ইতিহাসের বিষয়। আর মানুষের অনেক কাজই তার পরিবেশ ও ভুগোল দিয়ে ঠিক
হয়। উদাহরণস্বরূপ যারা নদীর পাশে বসবাস করে তাঁরা একভাবে বাঁচে এবং তাদের রোজকার
কাজকর্মে নদীর গুরুত্ব অনেক বেশী।
কিন্তু যারা মরুভূমি অঞ্চলে থাকে তাদের জীবণে
নদীর গুরুত্ব নেই বলনেই চলে। যাতায়াতের ক্ষেত্রে তাদের নৌকার থেকে উটের গুরুত্ব
সবচেয়ে বেশি। ভৌগোলিক পরিবেশের প্রভাবে ভিন্ন জায়গার মানষের জীবণধারণও ভিন্ন হয়ে
থাকে। তাদের খাবার, পোশাক, যানবাহন, ব্যবসাবানিজ্য, কাজকর্মে নানান তফাত লক্ষ করা
যায়। কাজকাম তার পরিবেশ এবং ভূগোলমাফিকIচলে।তাই ইতিহাস বুঝতে গেলে আমাদের Iসবসময়
ভূগোলটাও অবশ্যই জানাIউচিত।
উত্তরঃ- ভারতীয় উপমহাদেশঃ- উপমহাদেশ মানে প্রায় একটা মহাদেশের মতোই বড়ো অঞ্চল।
সেখানে নানারকম পরিবেশ অ মানুষ। পাহাড়, নদী, সমুদ্র, মরুভূমি সবমিলিয়ে উপমহাদেশের
পরিবেশ। মানুষের খাবার, পোশাক, ঘরবাড়িও নানা রকম। এই হরেকরকম মিলিমিশে বিরাট
এলাকা নিয়ে ছিল ভারতীয় উপমহাদেশ। তার উত্তরদিকে ছিল পাহাড়ি অঞ্চল। সিন্ধু ও গঙ্গা
নদীর দু-পাশের বিরাট সমভূমি অঞ্চল। বিন্ধ্য পর্বতের দক্ষিণদিকের তিনকোণা অঞ্চল।
এই নিয়ে তৈরী হয়েছিল ভারতীয় উপমহাদেশের ভূগোল।
4. ইতিহাসের সঙ্গে পরিবেশের সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ কেন ?
উত্তরঃ- ইতিহাসের সাথে পরিবেশের সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ। মানুষ কীভাবে পরিবেশের সাথে
মানিয়ে নিয়ে চলে সে সব কথা জানতে হয়। কীভাবে সে আগুন জ্বালাতে, পোশাক তৈরী করতে
শিখল, ছবি আঁকতে ও পড়তে শিখল, একজোট হয়ে থাকার সুবিধা কতটা বুঝতে শিখল, রান্না
করা, ঘর-বাড়ি বানানো, নদী বাঁধ দেওয়া, সম্মিলিত ভাবে চাষাবাদ করল। রকেট থেকে
কম্পিউটার তৈরী এ সবই মানুষ ও পরিবেশের সম্মিলিত চেষ্টার ফসল।
উত্তরঃ- মাটির নীচে চাপা পড়ে থাকা ঘরবাড়ি, বাসনপত্র, পোশাক, মুদ্রা, গয়না,
অস্ত্র-শস্ত্র, মূর্তি এমন নানা জিনিস থেকে পুরোনো দিনের কথা জানতে পারা যায়। তবে
এসব জিনিসও সবসময় পাওয়া যায় না। ভেঙে গিয়ে বা মাটির নীচে চাপা পড়ে নষ্ট হয়ে গেছে।
মাটির নীচে চাপা পড়ে যাওয়া জিনিসগুলি খুঁজে পাওয়া যায় অনেক সময়ে। এইসব জিনিসগুলিই
পুরোনো দিনের সাক্ষ্য। পুরোনো দিনের সেইসব জিনিস থেকে অনেক কিছু জানা যায়। তবে
সেগুলো অনেকটাই আন্দাজ। কারণ, সেই পুরোনো দিনগুলো আমরা চোখে দেখিনি। সেইসব পুরোনো
দিনের কথা জানতে মাটি খুঁড়ে পাওয়া জিনিসগুলোই কাজে লাগে। এইভাবে মাটির উপরে ও
নীচে ছড়িয়ে আছে ইতিহাসের নানা রকম উপাদান। সেই টুকরো টুকরো উপাদান খুঁজে জুড়ে নেন
প্রত্নতাত্ত্বিক ও ঐতিহাসিক। তার থেকে আমরা পুরোনো দিনের কথা জানতে পারি।
ঊত্তরঃ- প্রাচীন ভারতীয় উপমহাদেশের ইতিহাস তেমন সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা ছিল না।
কিন্তু ঐতিহাসিক ও প্রত্নতাত্ত্বিকরা নানাভাবে সেই ইতিহাস জানার চেষ্টাই করেন। যে
সমস্ত উপাদান ভারতীয় উপমহাদেশের উপাদান জানতে সাহায্য করে সেগুলি নিম্নে উল্লেখ
করা হল-
i) লেখমালাঃ- প্রাচীন ভারতীয় উপাদানগুলির মধ্যে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হল
লেখমালা। প্রাচীনকালে পাথর বা ধাতুর পাতে লিপি খোদাই করে লেখা হতো। সেই লেখাগুলি
ভারতীয় উপমহাদেশের নানা জায়গায় পাওয়া গেছে। পাথরের গায়ে খোদাই লেখাগুলিকে শিলালেখ
বলা হয়। মৌর্য সম্রাট অশোকের লেখগুলি লেখমালার শ্রেষ্ঠ নমুনা।
ii) প্রশস্তিঃ- প্রশস্তি মানে গুণগান করা। অনেক শাস্কের গুণগান লেখ হিসাবে খোদাই
করে রাখা হত। সেইগুলিকে বলা হয় প্রশস্তি। এই প্রশস্তিগুলি থেকে শাসকের বিষয়ে অনেক
কিছু জানা যায়। যেমন- সেই শাসকের সিংহাসন আরোহনের সময়কাল, রাজ্যবিস্তার,
প্রজাকল্যাণ ইত্যাদি জানা যায়।
iii) মুদ্রাঃ- প্রাচীন ভারতের ইতিহাস জানার জন্য মুদ্রার গুরুত্বও তাৎপর্যপূর্ণ।
মুদ্রায় শাসকের নাম, মূর্তি প্রভৃতি খোদাই করা থাকে। অব্দও পাওয়া যায় মুদ্রায়। এর
ফলে মুদ্রা থেকে নানারকম তথ্য জানতে পারা যায়। শক-কুষাণদের ইতিহাস তাদের মুদ্রা
থেকেই জানা যায়।
iv) স্থাপত্য, ভাস্কর্য ও চিত্রকলাঃ- প্রাচীন ভারতের নানা শিল্পবস্তু থেকেও
ইতিহাসের নানা কিছু জানা যায়। এই শিল্পবস্তু সাধারণভাবে তিনরকমের। স্থাপত্য,
ভাস্কর্য ও চিত্রকলা। পাথর, ধাতু ও পোড়ামাটির উপরে খোদাই করে নানা কিছু বানানো
হত। যেমন- দেব-দেবী, মানুষ ও পুশুর মুর্তি। এইগুলোই ভাস্কর্য। মন্দির বা
প্রাসাদের দেয়ালেও ভাস্কর্য খোদাই থেকে ওনেক বিষয় জানা যায়। তবে প্রাচীন ভারতের
চিত্রশিল্পের নমুনা যথেষ্ট পাওয়া যায় না। ভীমবেটকা ও অজন্তার মতো গুহার
দেয়ালগুলোতে আঁকা ছবিগুলি যদিও আজও রয়েছে। সেখানে ছবির বিষয় গিসাবে শাসক ও সাধারণ
মানুষের জীবনের নানাদিক ফুটে উঠেছে। প্রাচীন সমাজ ও জীবন বোঝাবার জন্য সেগুলি খুব
জরুরি। আবার স্থাপত্যের নানা নমুনা থেকেও পুরোনো দিনের কথা জানা যায়। বাড়ি-ঘর,
প্রাসাদ, মন্দির, এইসব স্থাপতের উদাহরণ।
আরও পড়ুনঃ
অধ্যায় ১ঃ ইতিহাসের ধারণা | Click Here |
অধ্যায় ২ঃ ভারতীয় উপমহাদেশে আদিম মানুষ | Click Here |
অধ্যায় ৩ঃ ভারতীয় উপমহাদেশের প্রাচীন ইতিহাসের ধারা | Click Here |
অধ্যায় ৪ঃ ভারতীয় উপমহাদেশের প্রাচীন ইতিহাসের ধারা ২ | Click Here |
অধ্যায় ৫ঃ খ্রিষ্টপূর্ব ষষ্ঠ শতকের ভারতীয় উপমহাদেহশ | Click Here |
অধ্যায় ৬ঃ সাম্রাজ্য বিস্তার ও শাসন | Click Here |
অধ্যায় ৭ঃ অর্থনীতি ও জীবনযাত্রা | Click Here |
অধ্যায় ৮ঃ প্রাচীন ভারতীয় উপমহাদেশের সংস্কৃতিচর্চা | Click Here |
অধ্যায় ৯ঃ ভারত সমকালীন বহির্বিশ্ব | Click Here |
No comments:
Post a Comment