Breaking

Saturday, December 24, 2022

History Chapter 2 Class 10 - মাধ্যমিক ইতিহাস সাজেশন | Madhyamik History Suggestion

History Chapter 2 Class 10 - মাধ্যমিক ইতিহাস সাজেশন

History Chapter 2 Class 10 suggestion who prepares Madhyamik exam 2023. In the article, I share the History Chapter 2 Suggestion. I hope It will help you to improve your study.

History Ch 2 Class 10

Hello students, তোমরা যারা ২০২৩ সালের মাধ্যমিক পরীক্ষার প্রস্তুতি গ্রহণ করছ তাদের জন্য মাধ্যমিক পরীক্ষার কথা মাথায় রেখে তৈরী করা হয়েছে মাধ্যমিক ইতিহাস সাজেশন। 

Madhyamik History Suggestion টি তোমাদের History Textbook এর History Ch 2 থেকে তৈর করা হয়েছে। History Chapter 2 Class 10 ইতিহাসের এই অধ্যায়ে উনিশ শতক বাংলার বিভিন্ন সংস্কারের পর্যালোচনা করা হয়েছে। 

২০২৩ সালের মাধ্যমিক পরীক্ষার ইতিহাস বিষয়ের সিলেবাস অনুযায়ী এই মাধ্যমিক ইতিহাস সাজেশনটি তৈরী করা হল এবং একই সাথে সেগুলির উত্তরও Madhymik History Suggestion টিতে থাকছে। নিম্নে সেই সাজেশনটি দেওয়া হল-

History Chapter 2 Class 10

১। কোন খ্রিস্টান মিশনারি এ দেশে ইংরেজি শিক্ষা প্রসারে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নিয়েছিলেন?

(ক) রর্বাট মে
( খ) ওয়ার্ড
(গ) উইলিয়াম কেরি
(ঘ) মার্শম্যান
➤ উঃ উইলিয়াম কেরি।

২। ভারতের প্রথম মহিলা গ্র্যাজুয়েট এর মধ্যে অন্যতম-
(ক) শান্তি সুধা ঘোষ
(খ) কল্পনা মিত্র
(গ) প্রিয়ংবদা দেবী
(ঘ) চন্দ্রমুখি বসু
➤ উঃ চন্দ্রমুখি বসু।

৩। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বাঙালি উপাচার্য-
(ক) আশুতোষ মুখোপাধ্যায়
(খ) উমাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়
(গ) শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়
(ঘ) গঙ্গাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়
➤ উঃ আশুতোষ মুখোপাধ্যায়।

৪। ইয়ং বেঙ্গল দলের প্রধান মুখপাত্র ছিল-
( ক) সমাচার দর্পণ
(খ) পার্থেনন
(গ) সম্বাদ কৌমুদী
(ঘ) মিরাৎ-উল-আখবার
➤ উঃ পার্থেনন।

৫। আদি ব্রাহ্ম সমাজের নেতৃত্ব দেন-
(ক) দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর
(খ) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
(গ) রাজা রামমোহন রায়
(ঘ) দ্বারকানাথ ঠাকুর
➤ উঃ দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর।

৬। ব্রাহ্মসমাজ কটি ভাগে বিভক্ত ছিল?-
(ক) একটি
(খ) দুইটি
(গ) তিনটি
(ঘ) চারটি
➤ উঃ তিনটি।

৭। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের প্রথম এম.ডি উপাধি প্রাপক-
(ক) মধুসূদন গুপ্ত
(খ) নীলরতন সরকার
(গ) ডা. মহেন্দ্রলাল সরকার
(ঘ) চন্দ্রকুমার দে
➤ উঃ চন্দ্রকুমার দে।

৯। সতীদাহ প্রথা রদ আইন জারি করেন কোন গভর্নর জেনারেল?-
(ক)লর্ড ওয়েলেসলি
(খ) হেস্টিংস
(গ) উইলিয়াম বেন্টিং
(ঘ) ডালহৌসি
➤ উঃ উইলিয়াম বেন্টিং।

১০। মিরাৎ-উল-আখবার যে ভাষায় প্রকাশিত হত ত-
(ক) ইংরেজি
(খ) পর্তুগিজ
(গ) ফারসি
(ঘ) উর্দু
➤ উঃ ফারসি

১১। বাংলার বাউল কবিদের মধ্যে অগ্রগণ্য ছিলেন-
(ক) ফকির শাহ
(খ) মজনু শাহ
(গ) কাঙাল হরিনাথ
(ঘ) লালন শাহ
➤ উঃ লালন শাহ।

১২। বাংলার ইতিহাসে রেনেসাঁস বা নবজাগরণ শব্দের প্রথম ব্যবহার করেন সম্ভবত
(ক) সুমিত সরকার
(খ) সুশোভন চন্দ্র সরকার
(গ) শিপ্রা সরকার
(ঘ) তনিমা সরকার
➤ উঃ সুশোভন চন্দ্র সরকার।

১৩। বেথুন স্কুলের সর্বপ্রথম কে নিজের কন্যাদের প্রেরণ করেছিলেন?
(ক)রাধাকান্ত দেব
(খ) রবীন্দ্র নাথ
(গ) মাইকেল মধুসূদন
(ঘ) মদনমোহন তর্কালঙ্কার
➤ উঃ মদনমোহন তর্কালঙ্কার।

১৪। দাক্ষিণাত্যে যে সমাজের উদ্যোগে বিধবা বিবাহ অনুষ্ঠিত হয়-
(ক) ব্রাহ্মসমাজ
(খ) প্রার্থনা সমাজ
(গ) আর্য সমাজ
(ঘ) দাক্ষিণাত্য শিক্ষা সমাজ
➤ উঃ প্রার্থনা সমাজ।

১৫। শিকাগো ধর্ম মহাসম্মেলন এর শ্রেষ্ঠ বক্তা ছিলেন ভারতের যে মনীষী তার নাম-
(ক) কেশব চন্দ্র সেন
(খ) দ্বারকানাথ ঠাকুর
(গ) রাজা রাম মোহন রায়
(ঘ) স্বামী বিবেকানন্দ
➤ উঃ স্বামী বিবেকানন্দ।

১৭। কোন ব্রাহ্মনেতা নারী অগ্রগতির অন্যতম প্রবর্তক?-
(ক)মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর
(খ) কেশব চন্দ্র সেন
(গ) অক্ষয় কুমার দত্ত
(ঘ) রাধাকান্ত মিত্র
➤ উঃ কেশব চন্দ্র সেন।

১৮।বাংলার বাইরে কে নারি অগ্রগতি আন্দোলনের প্রবর্তক?
(ক) বিদ্যাসাগর
(খ) রাজা রামমোহন রায়
(গ) কেশব চন্দ্র সেন
(ঘ) বিরসা লিঙ্গম
➤ উঃ বিরসা লিঙ্গম।

১৯। কোন পত্রিকা নীল বিদ্রোহ কে সমর্থন করে-
(ক) হিন্দু প্যাট্রিয়ট
(খ) নীলদর্পণ
(গ) অমৃতবাজার পত্রিকা
(ঘ) বেঙ্গল গেজেট
➤ উঃ হিন্দু প্যাট্রিয়ট।

২০। ‘হুতুম প্যাঁচা’ ছদ্মনাম গ্রহণ করেছিলেন-
(ক) বিদ্যাসাগর
(খ) রবীন্দ্রনাথ
(গ) অক্ষয় কুমার দত্ত
(ঘ) কালীপ্রসন্ন সিংহ
➤ উঃ কালীপ্রসন্ন সিংহ।

২১।‘মহাভারত’ এর বাংলা অনুবাদ করেন-
(ক) উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী
(খ) কালীপ্রসন্ন সিংহ
(গ) হরিশচন্দ্র মুখোপাধ্যায়
(ঘ) রনজিত গুহ
➤ উঃ কালীপ্রসন্ন সিংহ।

২২। ‘সংবাদ প্রভাকর’ এর সম্পাদক ছিলেন-
(ক) ভবানীচরণ
(খ) ঈশ্বর গুপ্ত
(গ) গঙ্গাকিশোর ভট্টাচার্য
(ঘ) মার্শম্যান
➤ উঃ ঈশ্বর গুপ্ত।
Read More:
মাধ্যমিক ইতিহাস প্রথম অধ্যায়ের  প্রশ্নোত্তর  Click Here
মাধ্যমিক ইতিহাস দ্বিতীয় অধ্যায়ের প্রশ্নোত্তর পর্ব ১ Click Here
মাধ্যমিক ইতিহাস দ্বিতীয় অধ্যায়ের প্রশ্নোত্তর পর্ব ২ Click Here
মাধ্যমিক ইতিহাস দ্বিতীয় অধ্যায়ের প্রশ্নোত্তর পর্ব ৩ Click Here
মাধ্যমিক ইতিহাস তৃতীয় অধ্যায়ের প্রশ্নোত্তর Click Here
মাধ্যমিক ইতিহাস চতুর্থ অধ্যায়ের প্রশ্নোত্তর Click Here
মাধ্যমিক ইতিহাস পঞ্চম অধ্যায়ের প্রশ্নোত্তর  Click Here
মাধ্যমিক ইতিহাস ষষ্ঠ অধ্যায়ের প্রশ্নোত্তর  Click Here

৩০। কমিটি অব পাবলিক ইন্সট্রাকশনের সভাপতি ছিলেন-
(ক) টমাস ব্যাবিংটন মেকলে
(খ) জোনাথন ডানকান
(গ) লর্ড অয়েলেসলি
(ঘ) হল্ট ম্যাকেনজি
➤ উঃ টমাস ব্যাবিংটন মেকলে


৩১। 'জেনারেল অয়াসেম্বলিজ ইনস্টিটিউশন' এর বর্তমান নাম-
(ক) স্কটিশ চার্চ কলেজ
(খ) বিদ্যাসাগর কলেজ
(গ) প্রেসিডেন্সি কলেজ
(ঘ) চিত্তরঞ্জন কলেজ
➤ উঃ স্কটিশ চার্চ কলেজ।


৩২। 'তত্ত্ববোধিনী সভা'র প্রতিষ্ঠাতা-
(ক) রামমোহন রায়
(খ) কেশবচন্দ্র সেন
(গ) দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর
(ঘ) স্বামী বিবেকানন্দ
➤ উঃ দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর।


৩৩। বাংলার নবজাগরণ ছিল-
(ক) ব্যক্তিকেন্দ্রিক
(খ) প্রতিষ্টানকেন্দ্রিক
(গ) কলকাতাকেন্দ্রিক
(ঘ) গ্রামকেন্দ্রিক
➤ উঃ কলকাতাকেন্দ্রিক।

৩৪। রাজা রামমোহন রায়কে 'আধুনিক ভারতের স্রষ্টা' বলে অভিহিত করেছেন-
(ক) ঐতিহাসিক রমেশচন্দ্র মজুমদার
(খ) ঐতিহাসিক স্পীয়ার
(গ) অধ্যাপক সুশোভন সরকার
(ঘ) অধ্যাপক অনিল শীল
➤ উঃ ঐতিহাসিক স্পীয়ার।

৩৫। নববিধান প্রতিষ্ঠা করেছিলেন-
(ক) দয়ানন্দ সরস্বতী
(খ) কেশবচন্দ্র সেন
(গ) স্বামী বিবেকানন্দ
(ঘ) দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর
➤ উঃ কেশবচন্দ্র সেন।

History Class 10 - Madhyamik History Suggestion

Madhyamik history suggestion for west board of secondary education (wbbse). নিম্নে উল্লেখিত মাধ্যমিক ইতিহাস সাজেশন ২০২৩ এর জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। Madhyamik History পরীক্ষায় ভালো ফল করতে চাই নিয়মিত অধ্যায়ন ও সেই বিষয়ের সাজেশন সম্পর্কে কমপ্লিট ক্লিয়ার ধারণা। Madhyamik History Suggestion টি থেকে অবশ্যই একটি প্রশ্ন তোমরা Madhyamik Exam 2023 তে কমন পাবেই।

রচনাধর্মী/ বিশ্লেষণধর্মী প্রশ্নোত্তর ( প্রশ্ন মান ৮ )

১।সর্বধর্ম সমন্বয়ের আদর্শ প্রতিষ্ঠায় শ্রীরামকৃষ্ণের ভূমিকা আলোচনা করো।
অথবা,
শ্রীরামকৃষ্ণ সর্বধর্ম সমন্বয়ের আদর্শ কিভাবে তুলে ধরেন।

উঃ সূচনাঃ আধুনিক ভারতের ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক ইতিহাস এযুগের সর্বশ্রেষ্ঠ আধ্যাত্বিক ব্যক্তিত্ব হলেন শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণ পরমহংসদেব। তথাকথিত শিক্ষা-দীক্ষা ও সংস্কৃতির পাশ্চাত্য জ্ঞান বর্জিত এই দরিদ্র ব্রাহ্মণ পুরোহিত জীবন ও সাধনার মধ্য দিয়ে উপলব্ধি করেছিলেন ভারতীয় দর্শন সংস্কৃতি ও সাধনার সভ্যতা। তিনি বুঝেছিলেন যে সর্বধর্ম সমন্বয় হল যুগের আদর্শ । উনিশ শতকের বাংলায় ধর্মীয় আন্দোলন যখন নানান মত ও পথের মধ্য দিয়ে এগিয়ে চলছে তখন রামকৃষ্ণ সর্বধর্ম সমন্বয়ের সন্ধান দেন। আসলে তিনি এক নব হিন্দু ধর্মের ভিত্তি স্থাপন করেছিলেন।

➤ যত মত তত পথঃ শ্রীরামকৃষ্ণ বৈষ্ণব থেকে শাক্ত ইসলাম থেকে খ্রিস্টান, দ্বৈত থেকে অদ্বৈত, সাকার থেকে নিরাকার, সগুণ থেকে নির্গুণ- সব সাধনায় উত্তীর্ণ হয়ে তিনি সাধনার মাধ্যমে এই সত্যে উপনীত হন যে - সব পথ দিয়েই ঈশ্বর কে পাওয়া যায়। তিনি বলেন- “যত মত তত পথ।”

➤ শিবজ্ঞানে জীবসেবাঃ সাধারণ পোশাক পড়ে সহজ সরল ভাষা ও উপমার সাহায্যে তিনি ধর্মীয় মতাদর্শ প্রচার করেন। তিনি বলেন যে ঈশ্বর লাভের জন্য পাণ্ডিত্য,শাস্ত্রজ্ঞান মন্ত্র-তন্ত্র আচার-অনুষ্ঠান যাগ-যজ্ঞ,শাস্ত্রীয়বিধি, কৃচ্ছ্রসাধন সংসার ত্যাগ জপতপ বা শুচিতার প্রশ্ন অপরিহার্য নয় - কেবল আন্তরিকতাকে সম্বল করে যে কোন মানুষ স্বাধীনভাবে সত্যকে উপলব্ধি করতে পারে। ঈশ্বরের নামে কর্মত্যাগ, কর্তব্যকর্মে অবহেলা ও সর্বপ্রকার পলায়নপর মনোবৃত্তিকে তিনি তীব্র ভাষায় ধিক্কার দিয়েছেন। তিনি সংসার ত্যাগ করতে বলেননি- ত্যাগ করতে বলেছেন সংসারে আসক্তি, কর্মত্যাগের কথা বলেননি- বলেছেন নিষ্কাম কর্মের কথা। তার কাছে ধর্মের অর্থ উদাসীনতা নয়- কর্মে আহবান ও দায়িত্ববোধ, জীব জগতের কল্যাণ সাধন, জীবে দয়া নয়-’ শিব জ্ঞানে জীব সেবা।’
➤ নারী মুক্তিঃ ভারতীয় নবজাগরণের অন্যতম বৈশিষ্ট্য নারীমুক্তির আদর্শকে তিনি পূর্ণতার পথে এগিয়ে দেন। তার কাছে নারী হলো সাক্ষাৎ জগন্মাতার প্রতিমূর্তি। কেবল নারীর মহিমা ঘোষণাই নয়- নারী জাতের দুর্দশা মোচন ও সে কাজে নারীর নেতৃত্বকে স্বীকৃতি জানিয়ে নারীর মহিমাকে তিনি আরো উঁচুতে তুলে ধরেন।
➤ মুল আদর্শঃ মানুষের মধ্যে বিশ্বাস শ্রীরামকৃষ্ণ মনে করতেন যে প্রত্যেক মানুষই হলো অনন্ত শক্তির আধার ও চৈতন্যের পথে অগ্রসর হওয়া হলো মানুষের ধর্ম। পাপী তাপী মদ্যপ নাস্তিক দুষ্কৃতকারী পন্ডিত সজ্জন-সকলেই মুক্ত পুরুষ, ঈশ্বরের সন্তান, রাজাধিরাজের পুত্র।শ্রীরামকৃষ্ণের মতে হিন্দুরা পৌত্তলিক নয়, তারা মৃন্ময়ীতে চিন্ময়ীর উপাসনা করে, ভগবান লাভই জীবনের মূখ্য উদ্দেশ্য, সাধনমার্গের সর পথই সত্য ও অভ্রান্ত,মানুষকে পাপী বলা অন্যায়,কারণ আত্মার নিষ্পাপ ও অবিনশ্বর। তিনি বলেন ঈশ্বর এক ও অভিন্ন। লোকে তারে বিভিন্ন নামে ডাকে।
➤ মূল্যায়নঃ উনিশ শতকের সংকীর্ণতা ও ধর্মীয় কোলাহলের দিনে মানব মহিমার জয়গান গেয়ে রামকৃষ্ণ মানুষের শ্রেষ্ঠত্ব, নারীমুক্তি, সেবাদর্শ ও মানব-হিতৈষণার কথা প্রচার করেন। তার প্রচারের ফলে জাতপাতের বেরাও ভেঙে যায় এবং আচার-অনুষ্ঠান সর্বোচ্চ কৃত্রিম হিন্দুধর্ম প্রাণবন্ত ও সহজ সরল হয়ে ওঠে।

২। উনিশ শতকের বাংলার সমাজ সংস্কার আন্দোলনে ব্রাহ্মসমাজগুলির কিরূপ ভূমিকা ছিল?
অথবা, সমাজ সংস্কারে ব্রাহ্মসমাজের অবদান লেখ?
অথবা, ব্রাহ্মসমাজ কবে, কে প্রতিষ্ঠা করেন। এর ভাঙন সম্পর্কে লেখ?
অথবা, টীকা লেখঃ ব্রাহ্মসমাজ।

উঃ ভূমিকাঃ ব্রাহ্মসমাজ আন্দোলনের সূচনা করেন রাজা রামমোহন রায়।একেশ্বরবাদ প্রচারের জন্য ১৮২৮ খ্রিস্টাব্দে ( মতান্তরে ১৮২৯ খ্রিঃ) রাজা রামমোহন রায় “ ব্রাহ্ম সভা” প্রতিষ্ঠা করেন, যা পরবর্তীকালে ‘ব্রাহ্মসমাজ’ (১৮৩০ খ্রিঃ) নাম ধারণ করে। তবে উনবিংশ শতকের দ্বিতীয়ার্ধে (১৮৩৩) রামমোহন রায়ের মৃত্যুর কারণে আন্দোলনের সামরিক ভাটা পড়ে। দ্বিতীয়ার্ধে দেবেন ও কেশব চন্দ্র কেশব চন্দ্র সেন এর মাধ্যমে পুনরায় আন্দোলন গতি পায়।
➤ দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরঃ রামমোহন রায়ের মৃত্যুর পর (১৮৩৩ খ্রিঃ) দ্বারকানাথ ঠাকুরের পুত্র দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর ব্রাহ্মসমাজের নেতৃত্ব গ্রহণ করেন। দেবেন্দ্রনাথ ব্রাহ্ম আন্দোলনকে একটি বিশেষ ধর্ম এবং ব্রাহ্মসমাজ কে একটি বিশেষ সম্প্রদায়ের রূপে গড়ে তোলেন। নানা নিয়ম-কানুন, বিভিন্ন আচার-আচরণ ও দীক্ষাদান রীতির প্রবর্তন করে তিনি ব্রাহ্ম আন্দোলন কে একটি সংগঠিত ধর্মীয় রূপ দেন এবং প্রথম ব্রাহ্ম ধর্ম প্রচারে উদ্যোগী হন।তিনি ‘ ব্রাহ্ম ধর্মের অনুষ্ঠান পদ্ধতি’ নামে একটি গ্রন্থ রচনা করেন। তার উদ্যোগে স্থাপিত ‘ তত্ত্ববোধিনী সভা’ এবং তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা বাংলার শিক্ষা, সমাজ ও সাংস্কৃতিক জীবন জীবনকে নানাভাবে সমৃদ্ধ করে।
➤ কেশবচন্দ্র সেনঃ ১৮৫৮ খ্রিস্টাব্দে তরুণ কেশব চন্দ্র সেন ব্রাহ্মসমাজে যোগদান করেন এবং অচিরেই তরুণ ব্রাহ্মদের নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠিত হয়। তাঁর সহকর্মীদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিলেন প্রতাপ চন্দ্র মজুমদার, বিজয় কৃষ্ণ গোস্বামী, উমেশচন্দ্রগুপ্ত প্রমূখ। তার সাফল্যে মুগ্ধ হয়ে ১৮৬২ খ্রিস্টাব্দে দেবেন্দ্রনাথ তাকে ‘ ব্রহ্মানন্দ’ উপাধি দেন।পরবর্তীতে দেবেন্দ্রনাথের রক্ষনশীলতার প্রতিবাদ করায় ১৮৬৬ খ্রিস্টাব্দে কেশব চন্দ্র সেন ও তার অনুগামীরা ব্রাহ্মসমাজ থেকে বহিষ্কৃত হন এবং তারা ভারতবর্ষীয় ব্রাহ্মসমাজ প্রতিষ্ঠা করেন।
➤ ব্রাহ্মসমাজে মতবিরোধ/ ভাঙ্গনঃ একেশ্বরবাদী হইলেও দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর মনে করতেন যে ব্রাহ্মধর্ম হিন্দুধর্মই, হিন্দুদের জন্যই এই ধর্ম এবং তা হিন্দুধর্মের বিশুদ্ধ রূপ। তিনি মূর্তিপূজা ব্যতীত হিন্দু সমাজ ও ধর্মের জাতিভেদ প্রথা বা অপর কিছুর বিরুদ্ধে প্রতিবাদে রাজি ছিলেন না। তার মতে ব্রাহ্মধর্ম হলো ধর্মীয় আন্দোলন- তিনি সমাজ সংস্কারকে এ আন্দোলনের অঙ্গীভূত করতে রাজি ছিলেন না। অপরপক্ষে, কেশবচন্দ্র ও তার অনুগামীদের কাছে ব্রাহ্মধর্ম হল সমন্বয় ও সার্বজনীন। কেবলমাত্র পৌত্তলিকতা নয়, তারা সমভাবেই জাতিভেদ ও অপরাপর সামাজিক কুপ্রথার বিরোধী ছিলেন এবং তাদের কাছে ব্রাহ্মধর্ম নিছক একটি ধর্মীয় আন্দোলন নয়- সমাজ সংস্কার ও এর অঙ্গীভূত।
➤ উপসংহারঃ উনবিংশ শতকের দ্বিতীয়ার্ধে ব্রাহ্মসমাজ আন্দোলন দ্বিধা বিভক্ত হলেও এর গুরুত্ব অস্বীকার করা যায়।


৩। উচ্চশিক্ষার বিকাশে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকা আলোচনা কর।
উঃ বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনঃ ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দে 'ভারতীয় বিশ্ববিদ্যালয় আইন' (Indian University Act) বলে কলকাতা, বোম্বাই ও মাদ্রাজ - এই তিনটি প্রেসিডেন্সি শহরে তিনটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের ২৪ জানুয়ারী বড়লাট এই আইনে স্বাক্ষর করে ফলে ওই দিনটিকে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠা দিবস বলে চিহ্নিত। এই সময় সারা পূর্ব ভারত, উত্তর ভারত এবং মধ্য ভারতের বৃহদংশ এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্ভুক্ত ছিল। 
➤ উদ্দেশ্যঃ সূচনাপর্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্দেশ্য ছিল অধীনস্থ ও অনুমোদিত স্কুল ও কলেজে পাঠরত ছাত্রদের পরীক্ষা গ্রহণ এবং উত্তীর্ণদের সার্টিফিকেত বা ডিগ্রি দেওয়া। সূচনাকালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ছিল ৭টি সরকারি, ৬টি মিশনারি এবং ১৪টি বেসরকারি অর্থাৎ মোট ২৭টি কলেজ।
➤ প্রথম গ্রাজুয়েটঃ ১৮৫৮ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালনায় প্রথম বি.এ.পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় এবং মোট ১১ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে মাত্র ২ জন উত্তীর্ণ হয়। এই দুই জন হলেন বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় ও যদুনাথ বোস। এরাই হলেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম দুজন গ্রাজুয়েট। ১৮৮৩ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম মহিলা গ্রাজুয়েট হন- কাদম্বিনী গাঙ্গুলী এবং চন্দ্রমুখী বসু। এশিয়ার প্রথম ডি.লিট. বেণীমাধব বড়ুয়া এই বিশ্ববিদ্যালয়েরই ছাত্র ছিলেন।

➤ শিক্ষা বিস্তারঃ এই সময় শিক্ষাক্ষেত্রে সত্যি সত্যিই উন্নতি হতে থাকে। ১৮৮১-৮২ খ্রিস্টাব্দে সারা দেশে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ছিল ৩,৯১৬ টি। ১৯০১-০২ সালে তার সংখ্যা দাঁড়ায় ৫,১২৪ এ । ১৮৮২ খ্রিস্টাব্দে কলেজের সংখ্যা ছিল ৭২ টি। ১৯০১ সালে তা হয় ১৪৫টি।
➤ বৃত্তিঃ শিক্ষার উন্নতিকল্পে বহু ধনবান ব্যক্তি এসময় এগিয়ে আসেন। শিক্ষা ও গবেষণার প্রসারে তাঁরা বহু টাকা ও পদক দেন এবং পুরস্কার। ১৮৬৮ খ্রিস্টাব্দে বোম্বাই এর ধনী ব্যবসায়ী প্রেমচাঁদ রায়চাঁদ এগিয়ে আসেন এবং তার নামে পি.আর.এস বা প্রেমচাঁদ রায়চাঁদ স্কলারশিপের ব্যবস্থা করা হয়। ধীরে ধীরে ঈশান স্কলারশিপ, গ্রিফিত মেমোরিয়াল পাইজ, স্যার আশুতোষ স্বর্ণপদক প্রভৃতি শত শত পুরস্কার ও বৃত্তির ব্যবস্থা করা হয়।
➤ উপসংহারঃ ১৯০৬ খ্রিস্টাব্দে স্যার আশুতোষ মুখোপাধ্যায়ের ভাইস-চ্যান্সেলার পদে যোগদান করেন। তিনি ভারত ও ভারতের বাইরে বিভিন্ন দেশ থেকে স্বনামধন্য পন্ডিতদের এনে বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপক পদে নিয়োগ করেন।তার আমলে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় সত্যিই এই আন্তর্জাতিক রূপ ধারণ করে। তাঁর আমল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে সুবর্ণযুগ।


৪। ঊনবিংশ শতকের সমাজ সংস্কার ও ধর্মসংস্কিয়ার আন্দোলনে রাজা রামমোহন রায়ের ভূমিকা আলোচনা করো।
অথবা, ঊনবিংশ শতকে সামাজিক ও সাংস্কৃতিক নবজাগরণে রাজা রামমোহন রায়ের অবদান আলোচনা করো।
অথবা, বাংলার নবজাগরণে রামমোহন রায়ের ভূমিকা ব্যাখ্যা কর।


উঃ ভূমিকাঃ বাংলা তথা ভারতে ঊনবিংশ শতাব্দীর নবজাগরণে পথপ্রদর্শকের ভূমিকা নেন রাজা রামমোহন রায়। সমাজকে কুসংস্কারমুক্ত করার পাশাপাশি পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রসার ছাড়া নতুন সমাজ গঠন অসম্ভব, এটা তিনি বুঝেছিলেন। এওজন্য রবীন্দ্রনাথ তাকে 'ভারতের প্রথম আধুনিক মানুষ' রূপে চিহ্নিত করেন এবং জওহরলাল নেহরু তাকে 'ভারতীয় জাতীয়তাবাদের জনক' বলেছেন।
➤ রাজা রামমোহন রায়ের অবদানঃ তিনি তার সমস্ত জীবন ধরেই আমাদের সমাজের ধর্মীয়  গোঁড়ামি ও কুসংস্কারের বিরুধে লড়াই চালিয়ে গেছেন এবং সমগ্র নারী জাতির কীভাবে কল্যাণ হয় তার চেষ্টা করে গেছেন। হিন্দুধর্মের পৌত্তলিকতাবাদ, বিভিন্ন কুসংস্কার, লোকাচার দূরীকরণে তার প্রচেষ্টা স্মরণীয়। ইংরেজি শিক্ষা বিস্তারের পাশাপাশি ধর্মশাস্ত্রগুলির দ্বারা ধর্মীয় সংস্কারে ব্রতী হন।

➤ শিক্ষাসংস্কারঃ শিক্ষাসংস্কারের উদ্দেশ্য ছিল ভারতীয়দের মনকে কুসংস্কার মুক্ত করা। তিনি উপলব্ধি করেন, পাশ্চাত্য শিক্ষাই ভারতীয়দের মনের সংকীর্ণতা দূর করতে পারবে। ১৮৩০ খ্রিস্টাব্দে জেনারেল অ্যাসেম্বলিজ ইনস্টিটিউশন গড়ার ক্ষেত্রে এবং ১৮১৭ খ্রিস্টাব্দে হিন্দু কলেজ প্রতিষ্ঠায় তার ভূমিকা ছিল।
➤ ধর্মসংস্কারঃ তার ধর্মসংস্কারের মুল লক্ষ্য ছিল একেশ্বরবাদকে জনপ্রিয় করা। তিনি হিন্দুদের মূর্তিপূজোর ঘোর বিরোধী ছিলেন। ১৮১৫ খ্রিস্টাব্দে তিনি গড়ে তোলেন আত্মীয়সভা এবং ১৮২৮ খ্রিস্টাব্দে গড়ে তোলেন ব্রাহ্মসভা। পরে এটি ব্রাহ্মসমাজ নামে পরিচিত হয়।
➤ নারী কল্যাণ চিন্তাঃ 'ভারত পথিক' যুগ প্রবর্তক রাজা রামমোহন র‍্য প্রথম ভারতবর্ষের নারীদের অন্ধকারের গুহা থেকে বের করে আলোয় আনার চেষ্টা করেছিলেন। সামাজিক কুসংস্কারের বিরুদ্ধে অত্যাচারিতা নিপীড়িতা ভারতীয় নারীকে তিনিই প্রথম দিতে চেয়েছিলেন আলোর ঠিকানা, মুক্তির পথ। বিভিন্ন কু প্রথার হাত থেকে নারীকে শুধুমাত্র রক্ষা করাই নয় তিনি চেয়েছিলেন নারীরা এই সমাজে মর্যাদা সহকারে বেঁচে থাকুক।
➤ নারীর অর্থনৈতিক অধিকারঃ নারীর অর্থনৈতিক অধিকার ও দাবিগুলির সমর্থনেও তিনি লড়াই চালিয়েছিলেন। স্বামীর মৃত্যুর পরেও নারীদের যাতে স্বামীর সম্পত্তির ওপর অধিকার থাকে তার দাবি তিনি করে গেছেন। সে সময় পিতার সম্পত্তিতে হিন্দু রমণীদের কোনো অধিকার ছিল না। তাই তিনি এই বৈষম্যের বিরুদ্ধেও আন্দোলন গড়ে তোলেন।
➤ বহুবিবাহ ও বিধবাবিবাহঃ রামমোহন বহুওবিবাহের বিরোধী এবং বিধবা বিবাহের সমর্থক ছিলেন। নির্দিষ্ট কারণ ছাড়া পুরুষের গহুওবিবাহকে তিনি অবৈধ ও শাস্ত্র বিরোধী বলে ব্যাখ্যা করেন। অল্প বয়সী হিন্দু বিধবাদের পুনরায় বিবাহের পক্ষেও তিনি প্রচেষ্টা চালান।
➤ সতীদাহ প্রথাঃ সে সময়কার ভারতবর্ষে সতীদাহ নামক একটি নিষ্ঠূর অমানবিক প্রথা প্রচলিত ছিল। মৃত স্বামীর জ্বলন্ত চিতায় তার স্ত্রীকে নবধুর সাজে সাজিয়ে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোর করে তাকে জীবন্ত অবস্থায় জ্বলন্ত চিতার আগুনে পুড়িয়ে মারা হত। রামমোহন সক্রিয়ভাবে এই বিভৎস প্রথার বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তোলেন। সে সময়কার বড়লাট লর্ড উইলিয়াম বেন্টিঙ্ক রামমোহনকে সমর্থন করেন। ১৮২৯ খ্রিস্টাব্দের ৭ই নভেম্বর রেগুলেশন জারি করে সতীদাহ প্রথা নিষিদ্ধ করেন।
➤ মুল্যায়নঃ রবীন্দ্রনাথ থেকে শুরু করে গান্ধিজি পর্যন্ত প্রত্যেকেই রামমোহন রায়ের প্রতি শ্রদ্ধাশীল ছিলেন। বাংলা তথা ভারতের আধুনিকীকরণে রামমোহন রায়ের অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। 'নবজাগরণের অগ্রদূত' রূপে তিনি আজও চিহ্নিত হয়ে আছেন এবং ভবিষ্যতেও থাকবেন। 

FAQ

Q. What is chapter 2 in history class 10?

Ans: In Class 10 History Chapter 2 contains Reformation: Characteristics and Review. Which includes 19th-century Bengali - periodicals, newspapers, and literature reflecting the society, education reform, women's education, initiatives to spread western education, social reform, religious reform, and the renaissance of 19th-century Bengal.

Q. What is history short answer Class 10?

Ans: Class 10 History short questions and answers are provided on the top 'Read More' option, Click the link and check out your short answer. 


No comments:

Post a Comment