Class 8 History Questions with Answers - তৃতীয় অধ্যায়ের অনুশীলনী প্রশ্নোত্তর
WB e-Learning,
হ্যালো বন্ধুরা, আজকে আমি তোমাদের জন্য Class 8 History বই "অতীত ও ঐতিহ্য" থেকে তৃতীয় অধ্যায়ের Class 8 History Question with Answer - তৃতীয় অধ্যায়ের অনুশীলনী প্রশ্নোত্তর নিয়ে এসেছি। এখানে পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্যদ অনুমোদিত "অতীত ও ঐতিহ্য" বই এর তৃতীয় অধ্যায় "ঔপনিবেশিক কতৃত্ব প্রতিষ্ঠা" থেকে যথা সম্ভব প্রশ্নোত্তর এখানে উপস্থাপন করা হল। আশা করি এতে তুমি খুবই উপকৃত হবে। এর আগের অধ্যায় যেমন - Class 8 History Question Answer Chapter 1 এবং Class 8 History Questions Answer Chapter 2 প্রশ্নোত্তর পেতে উপরিউক্তো লিংকে ক্লিক করে দেখতে পার।
১। বেমানান শব্দটি খুঁজে বার করো:
ক) বোম্বাই, মাদ্রাজ, কলকাতা, বাংলা
বেমানান শব্দ: বাংলা
👉 ব্যাখ্যা: বোম্বাই, মাদ্রাজ, কলকাতা হলো ব্রিটিশ প্রেসিডেন্সির প্রধান কেন্দ্র বা প্রেসিডেন্সির নাম, যেখানে বাংলা একটি বিস্তৃত অঞ্চল।
খ) ক্লাইভ, হেস্টিংস, দুপ্লে, কর্নওয়ালিস
বেমানান শব্দ: দুপ্লে
👉 ব্যাখ্যা: ক্লাইভ, হেস্টিংস এবং কর্নওয়ালিস ছিলেন ব্রিটিশ প্রশাসনিক কর্মকর্তা বা সেনাপতি, অন্যদিকে দুপ্লে ছিলেন ফরাসি গভর্নর।
গ) বাংলা, বিহার, সিন্ধু প্রদেশ, উড়িষ্যা
বেমানান শব্দ: সিন্ধু প্রদেশ
👉 ব্যাখ্যা: বাংলা, বিহার ও উড়িষ্যা ছিল ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির প্রথম দিকের প্রধান তিনটি অধিকৃত অঞ্চল, যেখানে সিন্ধু প্রদেশ পরে অধিকৃত হয়।
ঘ) ডেভিড হেয়ার, উইলিয়ম কেরি, জোনাথন ডানকান, উইলিয়ম পিট
বেমানান শব্দ: উইলিয়ম পিট
👉 ব্যাখ্যা: ডেভিড হেয়ার, উইলিয়ম কেরি এবং জোনাথন ডানকান ভারতে শিক্ষাবিস্তার ও প্রশাসনিক কাজের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত ছিলেন, অন্যদিকে উইলিয়ম পিট ছিলেন ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী এবং ভারতের প্রশাসনিক নীতি নির্ধারণে যুক্ত ছিলেন, কিন্তু সরাসরি ভারতে কাজ করেননি।
২। নীচের বিবৃতিগুলির কোনটি ঠিক কোনটি ভুল বেছে নাও:
ক) বাংলা প্রেসিডেন্সিকে সেন্ট জর্জ দুর্গ প্রেসিডেন্সি বলা হতো।
বিবৃতিটি ভুল।
👉 ব্যাখ্যা: মাদ্রাজ প্রেসিডেন্সির প্রধান কেন্দ্র ছিল সেন্ট জর্জ দুর্গ। বাংলা প্রেসিডেন্সির প্রধান কেন্দ্র ছিল ফোর্ট উইলিয়াম দুর্গ।
খ) বেনারসে হিন্দু কলেজ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন জোনাথন ডানকান।
বিবৃতিটি ভুল।
👉 ব্যাখ্যা: জোনাথন ডানকান বেনারসে সংস্কৃত কলেজ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন (১৭৯১ খ্রিস্টাব্দ)।
গ) উইলিয়ম কেরি ছিলেন শ্রীরামপুরের মিশনারি সোসাইটির সদস্য।
বিবৃতিটি ঠিক।
👉 ব্যাখ্যা: উইলিয়ম কেরি, জশুয়া মার্শম্যান ও উইলিয়ম ওয়ার্ড-এর উদ্যোগে ১৮০০ খ্রিস্টাব্দে শ্রীরামপুরে ব্যাপটিস্ট মিশন প্রতিষ্ঠিত হয়, যা ছিল একটি মিশনারি সোসাইটি।
ঘ) দশ বছরের ভূমি-রাজস্ব ব্যবস্থার জন্য কোম্পানি ইজারাদারি ব্যবস্থা চালু করেছিল।
বিবৃতিটি ভুল।
👉 ব্যাখ্যা: ইজারাদারি ব্যবস্থায় ভূমি রাজস্ব আদায়ের দায়িত্ব প্রথমে প্রতি বছর এবং পরে পাঁচ বছরের জন্য নিলামে দেওয়া হতো। এতে দশ বছরের ভূমি-রাজস্ব ব্যবস্থার কোনো উল্লেখ নেই, যা চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের পূর্ববর্তী দশশালা বন্দোবস্ত থেকে ভিন্ন।
৩। অতি সংক্ষেপে উত্তর দাও (৩০-৪০টি শব্দ):
ক) ব্রিটিশ প্রেসিডেন্সি ব্যবস্থা কাকে বলে?
উত্তরঃ- ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ভারতে ক্ষমতা বিস্তারের সঙ্গে সঙ্গে বোম্বাই, মাদ্রাজ ও কলকাতা এই তিনটি প্রধান কেন্দ্র তৈরি করেছিল। এই কেন্দ্রগুলিই ব্রিটিশ প্রেসিডেন্সি ব্যবস্থা নামে পরিচিত ছিল। প্রতিটি প্রেসিডেন্সির একজন গভর্নর ও একটি কাউন্সিল ছিল।
খ) কোম্পানি-পরিচালিত আইন ব্যবস্থাকে সংহত করার ক্ষেত্রে লর্ড কর্নওয়ালিস কী ভূমিকা নিয়েছিলেন?
উত্তরঃ- লর্ড কর্নওয়ালিস কোম্পানির প্রশাসনকে সংহত করার জন্য বিচার বিভাগের সংস্কার করেন। তিনি রাজস্ব বিভাগ থেকে বিচার বিভাগকে সম্পূর্ণ আলাদা করেন এবং বিভিন্ন স্তরে নতুন আদালত স্থাপন করেন। এর ফলে বিচার ব্যবস্থা আরও সুসংহত হয়।
গ) কোম্পানির সিপাহিবাহিনী বলতে কী বোঝো?
উত্তরঃ- ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ভারতে নিজেদের ক্ষমতা বিস্তারের জন্য যে সামরিক বাহিনী গঠন করেছিল, তাই কোম্পানির সিপাহিবাহিনী নামে পরিচিত। এই বাহিনীতে মূলত ভারতীয় সৈন্যরা ব্রিটিশ অফিসারদের অধীনে কাজ করত এবং ইউরোপীয় কায়দায় প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত ছিল।
ঘ) কোম্পানি-শাসনে জরিপের ক্ষেত্রে জেমস রেনেল-এর কী ভূমিকা ছিল?
উত্তরঃ- জেমস রেনেলকে ১৭৬৯ খ্রিস্টাব্দে বাংলার সার্ভেয়ার জেনারেল নিযুক্ত করা হয়। তিনি বাংলা ও বিহারের একটি মানচিত্র তৈরি করেছিলেন, যা ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির ভূমি জরিপ ও রাজস্ব নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
৪। নিজের ভাষায় লেখো (১২০-১৬০ টি শব্দ)
ক) ওয়ারেন হেস্টিংস ও লর্ড কর্নওয়ালিসের বিচার ব্যবস্থার সংস্কারের তুলনামূলক আলোচনা করো। ঐ সংস্কারগুলির প্রভাব ভারতীয়দের উপর কীভাবে পড়েছিল?
উত্তরঃ- ওয়ারেন হেস্টিংস এবং লর্ড কর্নওয়ালিস উভয়েই ভারতে ব্রিটিশ শাসনকে সুসংহত করার জন্য বিচার ব্যবস্থার সংস্কার করেছিলেন। ওয়ারেন হেস্টিংস জেলা স্তরে দেওয়ানি ও ফৌজদারি আদালত স্থাপন করে সাধারণ মানুষের জন্য বিচার ব্যবস্থাকে সহজলভ্য করার চেষ্টা করেন। অন্যদিকে, লর্ড কর্নওয়ালিস বিচার ব্যবস্থাকে রাজস্ব ব্যবস্থা থেকে সম্পূর্ণ আলাদা করেন এবং একটি সুসংগঠিত বিচার কাঠামো তৈরি করেন। তিনি কলকাতার সদর দেওয়ানি আদালত ও সদর নিজামত আদালত-সহ বিভিন্ন স্তরের আদালত স্থাপন করেন এবং আইনের চোখে সকলকে সমান বলে ঘোষণা করেন। তাঁর প্রবর্তিত আইন সংহিতা (কর্নওয়ালিস কোড) একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ ছিল।
এই সংস্কারগুলির প্রভাব ভারতীয়দের উপর মিশ্র ছিল। একদিকে, একটি সুসংগঠিত বিচার ব্যবস্থা চালু হওয়ায় আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হয়। অন্যদিকে, নতুন বিচার পদ্ধতিগুলি ভারতীয় সমাজের কাছে প্রায়শই জটিল ও ব্যয়বহুল মনে হয়েছিল। স্থানীয় রীতিনীতির পরিবর্তে ব্রিটিশ আইন প্রয়োগ হওয়ায় অনেক ক্ষেত্রে ভারতীয়রা নিজেদের সংস্কৃতি থেকে বিচ্ছিন্ন বোধ করে। উচ্চ বিচার বিভাগীয় পদগুলি প্রধানত ইউরোপীয়দের জন্য সংরক্ষিত থাকায় স্থানীয় জনসাধারণের জন্য ন্যায়বিচার পাওয়া কঠিন হয়ে পড়ে।
খ) ভারতে কোম্পানি-শাসনের বিস্তার ও সেনা বাহিনীর বৃদ্ধির মধ্যে কী সরাসরি সম্পর্ক ছিল বলে মনে হয়? তোমার উত্তরের পক্ষে যুক্তি দাও ৷
উত্তরঃ- কোম্পানির শাসন বিস্তার এবং সেনাবাহিনী বৃদ্ধির মধ্যে একটি সরাসরি ও অবিচ্ছেদ্য সম্পর্ক ছিল। ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ভারতে বাণিজ্য করতে এলেও, তাদের ক্ষমতা ও কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার জন্য সামরিক শক্তি অপরিহার্য হয়ে ওঠে। ১৭৫৭ সালের পলাশীর যুদ্ধের পর কোম্পানি বাংলায় রাজনৈতিক কর্তৃত্ব স্থাপন করে এবং ধীরে ধীরে একটি বিশাল সিপাহিবাহিনী গড়ে তোলে। এই সেনাবাহিনী ব্যবহার করেই কোম্পানি ভারতে বিভিন্ন অঞ্চলে তাদের শাসন বিস্তার করে, যেমন বক্সারের যুদ্ধ, ইঙ্গ-মহীশূর যুদ্ধ, ইঙ্গ-মারাঠা যুদ্ধ ইত্যাদির মাধ্যমে। এই যুদ্ধগুলি কোম্পানিকে আরও অঞ্চল দখল করতে এবং নিজেদের ক্ষমতা সুদৃঢ় করতে সাহায্য করে।
অর্থাৎ, সেনাবাহিনী বৃদ্ধি কোম্পানির রাজ্যবিস্তারের একটি প্রধান হাতিয়ার ছিল। অধিকৃত অঞ্চলগুলি শাসন করা, রাজস্ব আদায় করা এবং স্থানীয় বিদ্রোহ দমন করার জন্য একটি শক্তিশালী ও সংগঠিত সেনাবাহিনী প্রয়োজন ছিল। আবার, নতুন নতুন অঞ্চল দখলের ফলে কোম্পানির অর্থনৈতিক ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়, যা আরও বড় সেনাবাহিনী গড়ে তোলার জন্য অর্থ সরবরাহ করত। এভাবেই সাম্রাজ্য বিস্তার ও সামরিক শক্তির বৃদ্ধি একে অপরের পরিপূরক ছিল এবং এটি ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠায় কেন্দ্রীয় ভূমিকা পালন করে।
গ) ব্রিটিশ কোম্পানির প্রশাসন ব্যবস্থায় আমলাতন্ত্রের ভূমিকা কী ছিল ? কীভাবে আমলারা একটি সংকীর্ণ গোষ্ঠী হিসাবে ঐক্যবদ্ধ হয়েছিলো।
উত্তরঃ- ব্রিটিশ কোম্পানির প্রশাসন ব্যবস্থায় আমলাতন্ত্র একটি স্তম্ভস্বরূপ ছিল, যা ঔপনিবেশিক কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কোম্পানির কর্মচারীরা, যারা পরে সিভিল সার্ভেন্ট নামে পরিচিত হন, রাজস্ব আদায়, বিচার পরিচালনা এবং সাধারণ প্রশাসন ব্যবস্থার দায়িত্বে ছিলেন। লর্ড কর্নওয়ালিস আমলাতন্ত্রকে সুসংগঠিত করে তাদের বেতন বৃদ্ধি করেন এবং ব্যক্তিগত ব্যবসা নিষিদ্ধ করেন, যা তাদের একটি পেশাদারী বাহিনীতে রূপান্তরিত করে। এই আমলারা ব্রিটিশ শাসনের মূল ভিত্তি হিসেবে কাজ করত, যার লক্ষ্য ছিল কোম্পানির স্বার্থ রক্ষা ও শাসনকার্য সুচারুভাবে পরিচালনা করা।
আমলারা একটি সংকীর্ণ গোষ্ঠী হিসাবে ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল কারণ উচ্চ পদগুলি কেবল ব্রিটিশদের জন্য সংরক্ষিত ছিল। কর্নওয়ালিস বিশ্বাস করতেন যে ইউরোপীয়রা ভারতীয়দের চেয়ে বেশি নির্ভরযোগ্য এবং দক্ষ। এই নীতি ভারতীয়দের প্রশাসনের উচ্চ পদ থেকে বঞ্চিত করে এবং ব্রিটিশ কর্মচারীদের মধ্যে এক ধরনের একতা ও পারস্পরিক আনুগত্য তৈরি করে। কলকাতায় ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ স্থাপন করা হয় ব্রিটিশ সিভিল সার্ভেন্টদের প্রশিক্ষণের জন্য, যা এই গোষ্ঠীগত মানসিকতা গঠনে সাহায্য করে। এইভাবে, ব্রিটিশ আমলারা নিজেদের একটি শক্তিশালী ও বিচ্ছিন্ন গোষ্ঠী হিসাবে প্রতিষ্ঠা করে, যাদের প্রধান উদ্দেশ্য ছিল ভারতে ব্রিটিশ শাসনকে অক্ষুণ্ণ রাখা।
ঘ) কোম্পানি-শাসনের শিক্ষানীতির ক্ষেত্রে বাংলার সঙ্গে বোম্বাইয়ের কোনো তফাৎ ছিল কী? কোম্পানির শিক্ষানীতির প্রভাব ভারতীয় সমাজে কীভাবে পড়েছিল বলে তোমার মনে হয়?
উত্তরঃ- কোম্পানি শাসনের শিক্ষানীতির ক্ষেত্রে বাংলা ও বোম্বাইয়ের মধ্যে সুনির্দিষ্ট নীতিগত পার্থক্য উৎসগুলিতে সরাসরি উল্লেখ নেই। ঔপনিবেশিক শিক্ষানীতি মূলত সারা ভারতে একই আদর্শ অনুসরণ করত, যেমন লর্ড ম্যাকলে ও উডের ডেসপ্যাচ। তবে, কলকাতায় ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ, মাদ্রাসা ও বেনারসে সংস্কৃত কলেজ-এর মতো প্রতিষ্ঠান স্থাপন করা হয়েছিল।
শিক্ষানীতির প্রভাব ভারতীয় সমাজে মিশ্র ছিল। একদিকে, পাশ্চাত্য শিক্ষা ভারতীয়দের আধুনিক জ্ঞান ও বিজ্ঞান চর্চার সুযোগ দেয়, যা একটি শিক্ষিত মধ্যবিত্ত শ্রেণী তৈরি করে এবং সামাজিক সংস্কার ও জাতীয়তাবাদের জন্ম দেয়। অন্যদিকে, ঐতিহ্যবাহী ভারতীয় শিক্ষা ব্যবস্থা অবহেলিত হয়। এই শিক্ষা মূলত কেরানি তৈরির উদ্দেশ্যে পরিচালিত হওয়ায় সৃজনশীলতা হ্রাস পায়। সমাজের উচ্চ শ্রেণীগুলিই শিক্ষার প্রধান সুবিধাভোগী হওয়ায় সাধারণ মানুষ বঞ্চিত হয়। এর ফলে সমাজে একটি সাংস্কৃতিক ব্যবধান সৃষ্টি হয়।
ঙ) কোম্পানি-শাসনের সঙ্গে জমি জরিপের সম্পর্ক কী ছিল ? ইজারাদারি বন্দোবস্ত চালু করা ও তা তুলে দেওয়ার পিছনে কী কী কারণ ছিল?
উত্তরঃ- কোম্পানি শাসনের সঙ্গে জমি জরিপের সম্পর্ক অত্যন্ত নিবিড় ছিল, কারণ ভূমি রাজস্ব ছিল কোম্পানির প্রধান আয়ের উৎস। সঠিক জরিপের মাধ্যমে কৃষিজমির পরিমাণ ও রাজস্ব নির্ধারণ করা হতো। জেমস রেনেলকে বাংলার সার্ভেয়ার জেনারেল নিযুক্ত করে ভূমি জরিপ ও মানচিত্র তৈরির কাজ করানো হয়, যা রাজস্ব আদায়ের ভিত্তি স্থাপন করে।
ইজারাদারি বন্দোবস্ত চালু করার কারণ: ১৭৬৫ সালে দেওয়ানি লাভের পর কোম্পানি দ্রুত ও সর্বোচ্চ রাজস্ব আদায়ের জন্য এই ব্যবস্থা চালু করে। ওয়ারেন হেস্টিংস এই প্রথা চালু করেন, যেখানে ভূমি রাজস্ব আদায়ের দায়িত্ব নিলামে সর্বোচ্চ দরদাতাকে দেওয়া হতো।
ইজারাদারি বন্দোবস্ত তুলে দেওয়ার কারণ: এই ব্যবস্থায় কৃষকদের উপর অত্যধিক শোষণ ও কৃষির অবনতি ঘটে। ইজারাদাররা প্রায়শই কোম্পানিকে সময়মতো রাজস্ব দিতে ব্যর্থ হওয়ায় কোম্পানির আয় অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। দীর্ঘমেয়াদী স্বার্থের অভাবের কারণে ইজারাদাররা জমির উন্নতিতে মনোযোগী ছিল না। এই সমস্যাগুলি দূর করে একটি স্থিতিশীল রাজস্ব ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার জন্য লর্ড কর্নওয়ালিস ১৭৯৩ সালে চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত চালু করেন, যার ফলে ইজারাদারি ব্যবস্থার অবসান ঘটে।
No comments:
Post a Comment