Breaking

Wednesday, September 10, 2025

Class 7 History 3rd Unit Test Pdf Download - সপ্তম শ্রেণির ইতিহাস প্রশ্ন উত্তর সাজেশন

 Class 7 History 3rd Unit Test Pdf Download - সপ্তম শ্রেণির ইতিহাস প্রশ্ন উত্তর সাজেশন 

Class 7 History 3rd Unit Test: 3rd Unit Test হচ্ছে Class 7 এর Final Exam। এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা Class 7 এর জন্য। এই পরীক্ষায় পাশ করলে ছাত্রছাত্রীরা পরবর্তী Class 8 এ উত্তীর্ণ হয়ে থাকে। পরীক্ষায় ভালো ফল করতে আমাদের সাজেশনগুলি নিয়মিত follow করতে হবে। 
যদিও প্রশ্নপত্র কেমন হবে তা জানা না থাকলে ও প্রশ্নপত্র তৈরীর প্যাটার্ন এর উপর ভিত্তি করে  আজকের এই সপ্তম শ্রেণির ইতিহাসের তৃতীয় পর্যায়ক্রমিক মুল্যায়ন নমুনা প্রশ্নপত্রটি তোমাদের জন্য প্রস্তুত করা হল। 
class-7-history-3rd-unit-test-pdf-download

WB e-Learning,

        প্রিয় ছাত্রছাত্রীরা, তোমাদের কষ্ট লাঘব করতে নিয়ে চলে আসলাম তৃতীয় পর্যায়ক্রমিক মুল্যায়ন Class 7 ইতিহাসের নমুনা প্রশ্নপত্র। এই প্রশ্নপত্রটি তোমাকে পরীক্ষার পূর্ব জ্ঞান অর্জনে ও তোমার ভিতরে থাকা 3rd Unit Test সম্পর্কে যে ভীতি রয়েছে তা দূর করতে সচেষ্ট হবে। Class 7 History 3rd Unit Test Pdf Download  লিংক নেচে দেওয়া রয়েছে। এবং তোমার মতামত অবশ্যই শেয়ার করবে।


সপ্তম শ্রেণির ইতিহাস প্রশ্ন উত্তর সাজেশন


১। সঠিক উত্তরটি বেছে নিয়ে লেখো। (১x১৪=১৪)

১. আমুক্তমাল্যদ গ্রন্থটি লেখা—

(A) তেলুগু ভাষায়

(B) সংস্কৃত ভাষায়

(C) বাংলা ভাষায়

(D) হিন্দি ভাষায়

👉সঠিক উত্তর: (A) তেলুগু ভাষায়


২. পানিপথের প্রথম যুদ্ধ হয়—

(A) ১৫২৬ খ্রিস্টাব্দে

(B) ১৫৫৬ খ্রিস্টাব্দে

(C) ১৫৬১ খ্রিস্টাব্দে

(D) ১৫২৭ খ্রিস্টাব্দে

👉সঠিক উত্তর: (A) ১৫২৬ খ্রিস্টাব্দে


৩. শ্রীকৃষ্ণবিজয় এর মূল ভিত্তি ছিল—

(A) রামায়ণ

(B) মঙ্গলকাব্য

(C) ভাগবত

(D) শিবায়ন

👉 সঠিক উত্তর: (C) ভাগবত


৪. ইউরোপীয় চিকিৎসা পদ্ধতি ভারতে আসে—

(A) খ্রিস্টীয় পঞ্চদশ শতকে

(B) ষোড়শ শতকে

(C) সপ্তদশ শতকে

(D) অষ্টাদশ শতকে

👉 সঠিক উত্তর: (C) সপ্তদশ শতকে


৫. ধর্মীয় ও রাজনৈতিক ক্ষমতার প্রতীক হিসেবে গুরু হরগোবিন্দ—

(A) দুটি তলওয়ার নিতেন

(B) খুতবা পাঠ করাতেন

(C) খালসা তৈরি করেন

(D) জায়গির গ্রহণ করেন

👉 সঠিক উত্তর: (A) দুটি তলওয়ার নিতেন


৬. ভারতের সংবিধান কার্যকর হয়—

(A) ১৯৫০ খ্রিস্টাব্দে

(B) ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দে

(C) ১৯৪৬ খ্রিস্টাব্দে

(D) ১৯৫১ খ্রিস্টাব্দে

👉 সঠিক উত্তর: (A) ১৯৫০ খ্রিস্টাব্দে

৭. ব্লক তৈরি হয় অনেকগুলি—

(A) জেলা নিয়ে

(B) পৌরসভা নিয়ে

(C) গ্রাম নিয়ে

(D) জেলাপরিষদ নিয়ে

👉 সঠিক উত্তর: (C) গ্রাম নিয়ে


৮. ‘মনসব’ বলতে বোঝানো হয়—

(A) জমিদারি

(B) ওয়াতন

(C) গাজি

(D) মোগল প্রশাসনিক পদ

👉 সঠিক উত্তর: (D) মোগল প্রশাসনিক পদ


৯. ‘দাগ’ ও ‘হুলিয়া’ ব্যবস্থা চালু রেখেছিলেন—

(A) বাবর

(B) শেরশাহ

(C) হিমু

(D) অমর সিংহ

👉 সঠিক উত্তর: (B) শেরশাহ


১০. সুলতান রাজিয়ার মৃত্যু হয়—

(A) ১২৬৬ খ্রিস্টাব্দে

(B) ১২৪০ খ্রিস্টাব্দে

(C) ১২০৬ খ্রিস্টাব্দে

(D) ১২৩৬ খ্রিস্টাব্দে

👉 সঠিক উত্তর: (B) ১২৪০ খ্রিস্টাব্দে


১১. আলাউদ্দিন খলজির সেনাপতির নাম—

(A) মালিক কাপুর

(B) আবুল ফজল

(C) বীরবল

(D) অমর সিংহ

👉 সঠিক উত্তর: (A) মালিক কাপুর


১২. ইসলাম জগতের প্রধান শাসকের উপাধি ছিল—

(A) সুলতান

(B) আমির

(C) খলিফা

(D) নবাব

👉 সঠিক উত্তর: (C) খলিফা


১৩. প্রথম হরিহর ও বুক্ক প্রতিষ্ঠিত বংশের নাম—

(A) সঙ্গম বংশ

(B) সালুপ বংশ

(C) তুলুব বংশ

(D) আরাবির বংশ

👉 সঠিক উত্তর: (A) সঙ্গম বংশ


১৪. পুরন্দরের সন্ধি হয়েছিল—

(A) জয়সিংহ ও শিবাজীর মধ্যে

(B) বাবর ও ইব্রাহিম লোদীর মধ্যে

(C) জাহাঙ্গীর ও শিখদের মধ্যে

(D) জয়সিংহ ও বাবরের মধ্যে

👉 সঠিক উত্তর: (A) জয়সিংহ ও শিবাজীর মধ্যে


২। নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর চার-পাঁচটি শব্দ বা একটি বাক্যের মধ্যে দাও। (১x১৪=১৪)


১. হুমায়ুননামা বইটি কার লেখা ?

উত্তর: হুমায়ুননামা বইটি গুলবদন বেগমের লেখা।


২. আলাউদ্দিন খলজির চিতোর অভিযানের কথা কোন্ কাব্যে বর্ণিত আছে ?

উত্তর: আলাউদ্দিন খলজির চিতোর অভিযানের কথা পদ্মাবতী কাব্যে বর্ণিত আছে।


৩. নবম শিখগুরুর নাম কী ?

উত্তর: নবম শিখগুরুর নাম তেগবাহাদুর।


৪. ঠিক না ভুল লেখো : উত্তর – পশ্চিম সীমান্তে পাঠান উপজাতিরা মোগলদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছিল ।

উত্তর: ঠিক।


৫. জনগণ নিজেরাই নিজেদের মধ্যে শাসক বেছে নেন কোন্ পদ্ধতিতে ?

উত্তর: জনগণ নিজেরাই নিজেদের মধ্যে শাসক বেছে নেন গণতন্ত্র পদ্ধতিতে।


৬. ভারতীয় সংবিধানের প্রধান রূপকার কে ?

উত্তর: ভারতীয় সংবিধানের প্রধান রূপকার ডঃ বি আর আম্বেদকর।


৭. অদ্ভুতসাগর বইটি কার লেখা ?

উত্তর: অদ্ভুতসাগর বইটি বল্লাল সেনের লেখা।


৮. দিল্লি সুলতানিতে ‘ আমির ’ কাদের বলা হয় ?

উত্তর: দিল্লি সুলতানিতে ক্ষমতাবান তুর্কীদের ‘ আমির ’ বলা হয়।


৯. বেমানান শব্দটি খুঁজে বের করো : ইলতুতমিস , রাজিয়া , ইবন বতুতা , বলবন ।

উত্তর: ইবন বতুতা।


১০. শূন্যস্থান পূরণ করো : ________ ছিলেন সুহরাবর্দি সম্প্রদায়ের প্রতিষ্ঠাতা ।

উত্তর: বদরউদ্দিন জাকারিয়া ছিলেন সুহরাবর্দি সম্প্রদায়ের প্রতিষ্ঠাতা।


১১. ঠিক না ভুল লেখো : রজমনামা রামায়ণের অনুবাদ ।

উত্তর: ভুল।


১২. দিল্লিতে কে সুলতানি শাসন প্রতিষ্ঠা করেন?

উত্তর: দিল্লিতে কুতুবুদ্দিন আইবক সুলতানি শাসন প্রতিষ্ঠা করেন।


১৩. সেত পাথরের রত্ন বসিয়ে কারুকার্য করাকে বলা বলে _________।

উত্তর: সেত পাথরের রত্ন বসিয়ে কারুকার্য করাকে বলা বলে পিয়েত্রা দুরা।


১৪. কোন শব্দটি বেমানান: কেস কৃপান কলম না গঙ্গা?

উত্তর: কলম।


---

৩। নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর দু-তিনটি বাক্যের মধ্যে দাও। (২x৬=১২)


১. কবে ও কাদের মধ্যে পুরন্দরের সন্ধি হয়েছিল ?

উত্তর: ১৬৬৫ খ্রিস্টাব্দে শিবাজি এবং ঔরঙ্গজেবের প্রতিনিধি রাজা জয়সিংহের মধ্যে পুরন্দরের সন্ধি হয়েছিল।


অথবা, শিবাজির সঙ্গে মোগলদের দ্বন্দ্বের কারণ কী ছিল ?

উত্তর: শিবাজির উত্থান মুঘল সম্রাট ঔরঙ্গজেবের পক্ষে মেনে নেওয়া সম্ভব ছিল না। শিবাজির নেতৃত্বে মারাঠাদের উত্থান ছিল কেন্দ্রীয় শাসনের বিরুদ্ধে একটি বড়োসড়ো প্রতিরোধ আন্দোলন। শিবাজি একটি সুপরিকল্পিত এবং স্বাধীন শাসনব্যবস্থার প্রচলন করতে চেয়েছিলেন। এই নিয়ে শিবাজির সাথে মুঘলদের দ্বন্দ্ব শুরু হয়।


২. সরকারের প্রধান তিনটি বিভাগ কী কী ?

উত্তর: সরকারের প্রধান তিনটি বিভাগ হল আইন বিভাগ, শাসন বিভাগ ও বিচার বিভাগ।


অথবা, স্বায়ত্তশাসন কাকে বলে ?

উত্তর: ভারতের জনগণ শুধু শাসক নির্বাচন করেন না, নিজেরাও শাসনে অংশ নেন। সরাসরি শাসনে অংশ নেওয়াকেই বলে ‘স্বায়ত্তশাসন’। ‘স্ব’ মানে নিজের আর ‘আয়ত্ত’ মানে

অধীন। জনগণ যেখানে নিজেই নিজের অধীন সেই শাসনব্যবস্থাকে বলে ‘স্বায়ত্তশাসন’।


৩. বা – শরা ও বে – শরা কাকে বলে ?

উত্তর: সুফিরা প্রধানত দুই প্রকারের ছিল: বা – শরা এবং বে- শরা। যে সকল সুফীবাদীরা ইসলামীয় আইন অর্থাৎ শরা মেনে চলত তাদের বা – শরা বলা হত। চিশতি ও সুহরাবর্দিরা ছিল বা — শরা। যে সুফিরা ইসলামীয় আইন মেনে চলত না তারা ছিল বে – শরা। যাযাবর সুফি সম্প্রদায় কালানদার ছিল বে – শরা।


৪. পানিপথের দ্বিতীয় যুদ্ধ কত খ্রিস্টাব্দে কাদের মধ্যে হয়েছিল ?

উত্তর: পানিপথের দ্বিতীয় যুদ্ধ ১৫৫৬ খ্রিস্টাব্দে আকবরের সঙ্গে আফগান অধিপতি আদিল শাহের সেনাপতি হিমুর মধ্যে হয়েছিল।


৫. পাট্টা ও কবুলিয়ত কী ?

উত্তর: পাট্টা ও কবুলিয়ত ছিল শেরশাহ প্রবর্তিত ভূমিরাজস্ব বিষয়ক দুটি দলিল। প্রত্যেক প্রজার জমির সীমানা, তার দেয় খাজনা ও জমির ওপর তার অধিকার – স্বত্ব উল্লেখ করে সরকার থেকে প্রজাকে যে দলিল দেওয়া হত, তা ‘পাট্টা‘ নামে পরিচিত। তার বদলে নিজেদের স্বত্ত্ব ও রাজস্ব দেওয়ার শর্ত স্বীকার বা কবুল করে সরকারকে যে দলিল প্রজারা স্বাক্ষর করে দিত, তার নাম কবুলিয়ত


৬. অষ্টপ্রধান কি ?

উত্তর: শিবাজীর শাসনব্যবস্থা স্বৈরাচারী থাকা সত্ত্বেও তিনি শাসনকার্যের প্রতিটি ক্ষেত্রে অষ্টপ্রধানের পরামর্শ গ্রহণ করতেন। এই অষ্টপ্রধান হল পেশোয়া, অমাত্য, মন্ত্রী, সচিব, সামন্ত, সেনাপতি, পন্ডিতরাও এবং ন্যায়াধীশ। পেশোয়া ছিলেন প্রধানমন্ত্রী ও ন্যায়াধীশ ছিলেন বিচার বিভাগের প্রধান। এই অষ্টপ্রধান বা মন্ত্রীরা রাজ্যের ভিন্ন ভিন্ন বিষয় পরিচালনা করতেন।


---

৪। নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর চার-পাঁচটি বাক্যের মধ্যে দাও। (৩x৫=১৫)


১. দিল্লির সুলতানদের কেন খলিফার অনুমোদন দরকার হতো ?

উত্তর: একজন খলিফার পক্ষে সমগ্র ইসলামীয় জগতকে শাসন করা খুব অসুবিধা ছিল। তাই খলিফার অনুমোদন নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন ব্যক্তি শাসন করতেন। সবসময় যে সুলতানরা খলিফাকে মেনে চলত তা নয়, তবে যদি নিজের সুলতান হওয়া নিয়ে কোন অসুবিধা থাকতো বা গোলমাল হতো, সেক্ষেত্রে তারা বিভিন্ন উপহার উপঢৌকন খলিফার কাছে পাঠিয়ে অনুমোদন নিত।


অথবা, সুলতান ইলতুতমিসের সামনে প্রধান তিনটি সমস্যা কি ছিল ?

উত্তর: ইলতুতমিসের সামনে প্রধান তিনটি সমস্যা ছিল: ১. কিভাবে সাম্রাজ্যের মধ্যে বিদ্রোহী শক্তিকে সহজেই দমন করা যাবে। ২. কিভাবে মধ্য এশিয়ার এক দুর্ধর্ষ মোগল শক্তিকে মোকাবেলা করা যাবে। ৩. কিভাবে সুলতানিতে একটি রাজবংশ তৈরি করা যাবে, যাতে ইলতুতমিসের মৃত্যুর পর তার উত্তরাধিকারী সহজেই কোনো গোলযোগ বা গোলমাল ছাড়া সিংহাসনে বসতে পারে।


২. শেরশাহের শাসন ব্যবস্থায় কি কি মানবিক চিন্তার পরিচয় তুমি পাও ?

উত্তর: শেরশাহ তার রাজ্যের শাসন পরিচালনার জন্য ও রাজস্ব আদায়ের জন্য কিছু সংস্কার করেছিলেন, যেখানে তার মানবিক চিন্তার পরিচয় পাওয়া যায়। যেমন, তিনি কৃষকদের পাট্টাকবুলিয়াত ব্যবস্থা চালু করেন, যা কৃষকদের জমির অধিকার ও রাজস্বের স্বচ্ছতা এনেছিল। সেনাবাহিনীর উপর নিয়ন্ত্রণ রাখার জন্য দাগহুলিয়া ব্যবস্থা চালু করেন। এছাড়া, তিনি বণিক ও পথিকদের বিশ্রাম নেওয়ার জন্য রাস্তার ধারে ধারে অনেক সরাইখানা তৈরি করেছিলেন। যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতির জন্য তিনি সড়ক-ই-আজম (বর্তমান জিটি রোড) নির্মাণ করেছিলেন।


অথবা, মনসবদারী ব্যবস্থা সম্পর্কে টিকা লেখো ।

উত্তর: আকবরের শাসন ব্যবস্থায় প্রশাসনিক পদগুলিকে বলা হতো মনসব আর পদাধিকারীদের বলা হতো মনসবদার। মনসবদারদের কর্তব্য ছিল বাদশাহের জন্য সৈন্য প্রস্তুত রাখা, সৈন্যদের দেখাশোনা করা এবং যুদ্ধের সময় সৈন্য যোগান দেওয়া। পদ অনুসারে মনসবদারদের বিভিন্ন স্তর ছিল। সবচেয়ে উপরের পদগুলি শুধুমাত্র রাজ পরিবারের সদস্যদের জন্য রাখা হতো। উচ্চ পদস্থ মনসবদারদের বলা হতো আমির


৩. চিশতি সুফিদের জীবনযাপন কেমন ছিল ?

উত্তর: চিশতিরা ছিলেন বা – শরা সুফি, অর্থাৎ তারা ইসলামীয় আইন (শরা) মেনে চলত। তারা যাযাবর ছিল না এবং একটি নির্দিষ্ট স্থানে বসবাস করত। চিশতি সুফিরা ইসলামের নৈতিক ও আধ্যাত্মিক মূল্যবোধের উপর গুরুত্ব দিত।


অথবা, কবির সম্পর্কে টিকা লেখো ।

উত্তর: রামানন্দের শিষ্যদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন কবির। তিনি ছিলেন মধ্যযুগের ভারতের সর্বাপেক্ষা উদারপন্থী সংস্কারক। হিন্দু দর্শন ও সুফি সন্তদের শিক্ষা তাকে গভীরভাবে প্রভাবিত করে। বিভিন্ন ধর্মের মধ্যে তিনি কোন পার্থক্য স্বীকার করতেন না এবং সকল সম্প্রদায়ের মধ্যে সম্প্রীতি স্থাপনই ছিল তার মূল লক্ষ্য। কবিরের মতে, তীর্থযাত্রা, পুণ্যস্নান, শাস্ত্র পাঠ, বিধি পালন বা আচার অনুষ্ঠান পালন নয়, কেবলমাত্র মনের পবিত্রতা ও আন্তরিকতার মাধ্যমে ঈশ্বর লাভ সম্ভব। হিন্দু ও মুসলিম উভয় সম্প্রদায়ের মানুষেরাই তার শিষ্যত্ব গ্রহণ করেন এবং তার রচিত দোহাগুলি হিন্দি সাহিত্যের অমূল্য সম্পদ।


৪. ক্যালিগ্রাফি ও মিনিয়েচার বলতে কি বোঝায় ?

উত্তর: ইংরেজি শব্দ ক্যালিগ্রাফির বাংলা অর্থ হলো হস্তলিপি বিদ্যা বা হস্তলিপি শিল্প। মধ্যযুগের ইতিহাসে ছাপাখানার রেওয়াজ ছিল না, তাই এই সময়ে সুন্দর হাতের লেখার শিল্প ভীষণভাবে চর্চা হতো। এই যুগে হাতে লেখা বইগুলি ছিল শিল্পের নমুনা। অন্যদিকে, ইংরেজি শব্দ মিনিয়েচার কথার বাংলা অর্থ হলো অনুচিত্র। সম্রাট আকবরের সময় তুতিনামা, রাজবনামা (মহাভারতের ফরাসি অনুবাদ) প্রভৃতি বইয়ের মিনিয়েচার দেখা যায়। বইগুলিতে অলংকরণের জন্য সোনার রং ও অন্যান্য রং ব্যবহৃত হতো, ফলে পৃষ্ঠাগুলি ঝলমল করত। লেখার চারপাশে নানা রকম অলংকরণ করা হতো।


৫. জায়গিরদারী বা মনসবদারী ব্যবস্থায় কেন সংকট তৈরি হয়েছিল ?

উত্তর: মনসবদারী ও জায়গিরদারী ব্যবস্থা মুঘল সাম্রাজ্যের প্রশাসনিক কাঠামোয় গুরুত্বপূর্ণ ছিল। তবে এই ব্যবস্থায় সংকট তৈরি হয়েছিল কারণ মনসবদারদের সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে, কিন্তু তাদের বিতরণের জন্য পর্যাপ্ত জায়গিরের অভাব দেখা দেয়। এর ফলে মনসবদারদের মধ্যে অসন্তোষ বাড়তে থাকে এবং তারা কম আয়ের কারণে সামরিক দায়িত্ব পালনে সক্ষম হচ্ছিল না। এটি মুঘল সাম্রাজ্যের আর্থিক ও প্রশাসনিক দুর্বলতার একটি কারণ হয়ে দাঁড়ায়।


---

৫। নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর আট-দশটি বাক্যের মধ্যে দাও। (৫x৩=১৫)


১. ভারতকে কেন গণতান্ত্রিক ও যুক্তরাষ্ট্রীয় দেশ বলা হয় তা ব্যাখ্যা করো ।

উত্তর: ভারত একটি বিশাল দেশ, যেখানে একটি কেন্দ্রীয় সরকার এবং প্রতিটি রাজ্যের নিজস্ব রাজ্য সরকার রয়েছে। কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকার উভয়ই জনগণ দ্বারা নির্বাচিত হয়। যে শাসনব্যবস্থায় কেন্দ্রীয় ও রাজ্য উভয় প্রকার সরকারের ক্ষমতাই স্বীকার করা হয়, তাকে যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকার ব্যবস্থা বলে।

ভারতের সরকার একদিকে গণতান্ত্রিক কারণ জনগণ নিজেরা শাসক বেছে নেন, আবার অন্যদিকে তা যুক্তরাষ্ট্রীয় কারণ কেন্দ্রীয় ও রাজ্য উভয় ধরনের সরকারই ভারতীয় শাসনব্যবস্থায় আছে। এই কারণে ভারতকে গণতান্ত্রিক ও যুক্তরাষ্ট্রীয় দেশ বলা হয়।


২. মোহম্মদ বিন তুঘলককে ‘পাগলা রাজা’ বলা হয় কেন ?

উত্তর: মহম্মদ – বিন – তুঘলককে ঐতিহাসিকরা খামখেয়ালি ও পাগলা রাজা বলে অভিহিত করেছেন। তাঁর কাজকর্মকে ‘তুঘলকি কাণ্ড’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। ঐতিহাসিকদের মতে, মহম্মদ – বিন – তুঘলক ছিলেন অস্থিরচিত্ত, ধৈর্যহীন ও রাগী মানুষ। তাঁর গৃহীত পরিকল্পনাগুলি সময়োপযোগী ছিল, কিন্তু তা বাস্তবায়িত করার মানসিকতা সুলতানের না থাকার জন্য পরিকল্পনাগুলি ব্যর্থ হয়। যেমন, বাড়তি কর সংগ্রহ করার জন্য দোয়াব অঞ্চলে রাজস্ব বাড়িয়ে দেন, কিন্তু অনাবৃষ্টির ফলে শস্যের ক্ষতি হলে প্রজারা বিদ্রোহ করে। 

সুলতান বাড়তি কর মকুব করলেও রাজকোষ দেউলিয়া হয়ে পড়ে। তাঁর তাম্র মুদ্রার প্রচলন নীতি উপযুক্ত নজরদারির অভাবে ব্যর্থ হয় এবং সারা দেশ নকল মুদ্রায় ভরে যায়। রাজধানী স্থানান্তরণের সময় তিনি অত্যন্ত কঠোরতার সঙ্গে দিল্লির সমস্ত মানুষকে দৌলতাবাদে যেতে বাধ্য করেছিলেন, যা অদূরদর্শী পদক্ষেপ ছিল। কারাজল অভিযানেও খাদ্যাভাব, প্রতিকূল আবহাওয়া ও পার্বত্য উপজাতির আক্রমণে সুলতান বাহিনী চূড়ান্ত বিপর্যস্ত হয়। এই কারণগুলির জন্যই মহম্মদ বিন তুঘলককে পাগলা রাজা বলা হয়।


অথবা, আলাউদ্দিন খলজির সময় দিল্লির বাজারদর নিয়ন্ত্রণ বিষয়ে লেখো ।

উত্তর: আলাউদ্দিন খলজি দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা চালু করতে গিয়ে বিভিন্ন নিয়ম ও বিধিনিষেধ তৈরি করেন। 

প্রথমত, খাদ্যদ্রব্য, বস্ত্র, গবাদি পশু এমনকি দাস-দাসীর মূল্য নির্ধারণ করে দেন। 

দ্বিতীয়ত, কৃষকদের কাছ থেকে শস্যের মাধ্যমে রাজস্ব গ্রহণ করা হতো এবং এই শস্য দিল্লির বিভিন্ন সরকারি গোদামে মজুদ রাখা হতো। 

তৃতীয়ত, সরকার ব্যতীত কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের পক্ষে প্রয়োজনের অতিরিক্ত ফসল মজুদ নিষিদ্ধ ছিল। 

চতুর্থত, কোনো ব্যবসায়ী নির্ধারিত মূল্যের বেশি নিলে তার মালপত্র বাজিয়াপ্ত করে তাকে কঠোর শাস্তি দেওয়া হতো; এমনকি ওজনে কম দিলে তার দেহ থেকে সমপরিমাণ মাংস কেটে নিয়ে শাস্তি দেওয়ার ব্যবস্থা হয়। 

পঞ্চমত, আলাউদ্দিন খলজি রেশনিং ব্যবস্থা চালু করে দুর্ভিক্ষের সময় প্রতিটি পরিবারকে আধমন করে খাদ্যশস্য সরবাহের ব্যবস্থা করেন। এই সংস্কারগুলির মাধ্যমে তিনি দিল্লির বাজারদর কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করেছিলেন।


৩. বাংলায় ভক্তিবাদী আন্দোলনে শ্রীচৈতন্যদেবের অবদান সংক্ষেপে আলোচনা করো ।

উত্তর: খ্রিস্টীয় ষোড়শ শতকে বাংলায় শ্রীচৈতন্যদেব যে ভক্তি আন্দোলন প্রচার করেন, তার ফলে বাংলায় বৈষ্ণব ভক্তির জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পায়। শ্রীচৈতন্য বাংলায় পূর্বের বৈষ্ণব ধর্মের ঐতিহ্য ও ভক্তিবাদের ভাবনাকে একাকার করে দেন। জাতি – ধর্ম – বর্ণ নির্বিশেষে এই ভেদাভেদের বিরুদ্ধে বৈষ্ণব ভক্তি একটি আন্দোলন রূপে ছড়িয়ে পড়ে। তিনি জাতিভেদ প্রথা মানতেন না এবং বহু মানুষ তার শিষ্যত্ব গ্রহণ করেন। 

চৈতন্যদেব ও তাঁর অনুগামীরা জাতিভেদ না মানলেও সমাজে ভেদাভেদ থেকেই গিয়েছিল। তবে সবরকম ভেদাভেদ পুরো দূর করতে না – পারলেও, সেগুলোকে তুচ্ছ করা যায়—এ কথা চৈতন্যদেব জোর দিয়েই প্রচার করেন, যা তৎকালীন সমাজের তুলনায় একটি বড়ো সাফল্য ছিল। 

চৈতন্য ও তাঁর ভক্তি আন্দোলনের সবচেয়ে গভীর প্রভাব পড়েছিল বাংলার সংস্কৃতিতে। সাধারণ মানুষের বাংলা ভাষাকে সম্মান জানিয়ে সেই ভাষাতেই ভক্তি প্রচার করেন চৈতন্যদেব। শ্রীচৈতন্যের জীবন ও বৈষ্ণব ভক্তিবাদ নিয়ে অনেক সাহিত্য এই সময়ে রচিত হয়, যা বাংলা ভাষার বিকাশের পথ তৈরি করে। আজও তিনি শ্রীকৃষ্ণের অবতার রূপে পূজিত হয়ে থাকেন।


অথবা, সম্রাট আকবরের রাজপুত নীতি সম্পর্কে আলোচনা করো ।

উত্তর: মুঘল সম্রাট আকবরের কূটনৈতিক বিচক্ষণতার শ্রেষ্ঠ পরিচয় ছিল তার রাজপুত নীতি। রাজপুতদের উপর কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার জন্য সম্রাট আকবর কয়েকটি নীতি অনুসরণ করেছিলেন: 

প্রথমত, বৈবাহিক সম্পর্কের নীতি: সম্রাট আকবর অম্বরের রাজকন্যা যোধাবাইকে, বিকানীর ও যোধপুরের রাজকন্যাদের বিবাহ করেন। তাছাড়া আকবর তার পুত্র সেলিম (জাহাঙ্গীর)-এর সঙ্গেও রাজপুত রাজকন্যার বিবাহ দেন। 

দ্বিতীয়ত, উচ্চ রাজপদে নিয়োগ নীতি: সম্রাট আকবর রাজপুতদের উচ্চপদে নিয়োগ করে তাদের আনুগত্য লাভ করেছিলেন। 

তৃতীয়ত, বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা প্রদান নীতি: রাজপুতদের সাহায্য ও সহযোগিতা লাভের জন্য আকবর তাদের উপর থেকে তীর্থকর বা জিজিয়া তুলে দেন এবং তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করার সিদ্ধান্ত নেন। 

চতুর্থত, যুদ্ধনীতি: অনেক রাজপুত রাজ্য আকবরের বশ্যতা স্বীকার করলেও, মেওয়ার, রণথম্ভর প্রভৃতি রাজপুত রাজ্যগুলি কোনোভাবেই আকবরের বশ্যতা স্বীকার করতে রাজি হয়নি। তাই আকবর মেওয়ারের বিরুদ্ধে যুদ্ধনীতি অনুসরণ করেন। 

মূল্যায়নে বলা যায়, আকবর মৈত্রী ও যুদ্ধনীতি অনুসরণ করে রাজপুতদের নিজ নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হন এবং মুঘল সাম্রাজ্যের ভিত্তি সুদৃঢ় হয়।


File Details:
Name: Class 7 History 3rd Unit Test Pdf Download
Language: Bengali
Page No: 07
Size: 328Kbs
Download: Click Here To Download

No comments:

Post a Comment