Class 6 History 3rd Unit Test Questions with Answers - তৃতীয় পর্যায়ক্রমিক মুল্যায়ন নমুনা প্রশ্নপত্র ষষ্ঠ শ্রেণি
প্রিয় ছাত্রছাত্রীরা, তোমাদের কষ্ট লাঘব করতে নিয়ে চলে আসলাম Class 6 History 3rd Unit Test Questions with Answers-তৃতীয় পর্যায়ক্রমিক মুল্যায়ন Class 6 ইতিহাসের নমুনা প্রশ্নপত্র। এই প্রশ্নপত্রটি তোমাকে পরীক্ষার পূর্ব জ্ঞান অর্জনে ও তোমার ভিতরে থাকা 3rd Unit Test সম্পর্কে যে ভীতি রয়েছে তা দূর করতে সচেষ্ট হবে। Class 6 3rd Unit Test History Questions Pdf Downlod লিংক নেচে দেওয়া রয়েছে। এবং তোমার মতামত অবশ্যই শেয়ার করবে।
WB e-Learning |
Exam Schedule |
---|---|
পরীক্ষা |
তৃতীয় পর্যায়ক্রমিক মুল্যায়ন |
শ্রেণি |
ষষ্ঠ |
বিষয় |
ইতিহাস |
পুর্ণমান |
৭০ |
সময় |
২ ঘন্টা ৩০ মিনিট |
তৃতীয় পর্যায় ক্রমিক মুল্যায়ন নমুনা প্রশ্নপত্র ষষ্ঠ শ্রেণি
১. সঠিক উত্তরটি বেছে নিয়ে লেখো (১৪টি প্রশ্নের উত্তর দাও): (১x১৪=১৪)
ক) কোন সাহিত্যকে ইন্দো-আর্য ভাষার প্রাচীনতম সাহিত্য বলে মনে করা হয়?
১. ব্রাহ্মণ
২. মহাভারত
৩. ঋগ্বেদ
৪. বেদান্ত
👉 উত্তর: ঋগ্বেদ
খ) দ্রোণাচার্য কার গুরু ছিলেন?
১. অধম্য
২. গৌতম
৩. আত্রেনা
৪. একলব্যের
👉 উত্তর: একলব্যের
গ) দশ রাজার যুদ্ধে কোন রাজা জয়লাভ করেছিলেন?
১. ভরত
২. সুদাস
৩. বিক্রমাদিত্য
৪. অশোক
👉 উত্তর: সুদাস
ঘ) 'মার্গ' শব্দটির অর্থ কী?
১. সম্মান
২. পথ
৩. সূত্রনা
৪. নীতি
👉 উত্তর: পথ
ঙ) বসজিদের রাজধানী নগরীর নাম কী ছিল?
১. অবন্তি
২. পাবা
৩. কৌশল
৪. বৈশালী
👉 উত্তর: বৈশালী
চ) 'অর্থশাস্ত্র' গ্রন্থটি কে রচনা করেন?
১. বাণভট্ট
২. কলহন
৩. কৌটিল্য
৪. হরিসেন
👉 উত্তর: কৌটিল্য
ছ) কলিঙ্গরাজ খারবেল সম্পর্কে কোন শিলালেখ থেকে জানা যায়?
১. এলাহাবাদ প্রশস্তি
২. হাতিগুম্ফা শিলালেখ
৩. জুনাগড় শিলালেখ
৪. নাসিক প্রশস্তি
👉 উত্তর: হাতিগুম্ফা শিলালেখ
জ) চীনা পর্যটকরা ভারতবর্ষকে কী নামে অভিহিত করতেন?
১. মগধ
২. ইন্তু
৩. সিন্ধু
৪. ভারত
👉 উত্তর: ইন্তু
ঝ) শালিধানের চাষ কোন অঞ্চলে সর্বাধিক প্রচলিত ছিল?
১. বারাণসী
২. বঙ্গ
৩. মগধ
৪. তামিলনাড়ু
👉 উত্তর: মগধ
ঞ) কম্বনের রামায়ণ অনুসারে, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র কে ছিলেন?
১. রাম
২. রাবণ
৩. লক্ষণ
৪. সীতা
👉 উত্তর: রাবণ
ট) দেওঘরে কোন বিখ্যাত মন্দিরটি অবস্থিত?
১. মহাবলিপুরম মন্দির
২. দশাবতার মন্দির
৩. ইলোরা মন্দির
৪. চন্দ্রকেতুগড় মন্দির
👉 উত্তর: দশাবতার মন্দির
ঠ) কোন শাস্ত্রকে 'উপবেদ' বলা হয়?
১. রামায়ণ
২. মহাভারত
৩. চিকিৎসাশাস্ত্র
৪. সঙ্গম সাহিত্য
👉 উত্তর: চিকিৎসা শাস্ত্রকে
ড) সেলুকাসের রাষ্ট্রদূত হিসেবে কে মৌর্য দরবারে এসেছিলেন?
১. মেগাস্থিনিস
২. ডামাকাস
৩. ফেসিয়ান
৪. প্রথম অ্যান্টিওকাস
👉 উত্তর: মেগাস্থিনিস
ঢ) প্রাচীন তাম্রলিপ্ত বন্দরটি বর্তমান ভারতের কোন স্থানে অবস্থিত?
১. উত্তর পঙ্কন উপকূল
২. মালাবার উপকূল
৩. কাবেরী দ্বীপ এলাকা
৪. পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুকে
👉 উত্তর: পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুকে
২। শূন্যস্থান পূরণ করো (যেকোনো ৫টি): (১x৫=৫)
১. হেরোডোটাসের মতে, পারসিক সাম্রাজ্যের একটি প্রদেশ ছিল __________।
উত্তরঃ প্রদেশ।
২. জীবক ছিলেন একজন বিখ্যাত _________।
উত্তরঃ রাজবৈদ্য।
৩. সাতবাহন রাজা হাল ________ গ্রন্থটি সংকলন করেন।
উত্তরঃ গাথা সপ্তসতী।
৪. কনিষ্ক ৭৮ খ্রিস্টাব্দে __________ বংশের শাসক হন।
উত্তরঃ কুশান।
৫. ভদ্রবাহু ছিলেন ________ নেতা।
উত্তরঃ দিগম্বরদের।
৬. পরবর্তী বৈদিক যুগে __________ছিল অন্যতম পালিত পশু।
উত্তরঃ ঘোড়া।
৭. মহাবীর ৭২ বছর বয়সে ________ নগরীতে অনশন করেন।
উত্তরঃ পাবা।
৮. সর্বজ্ঞানী হওয়ার পর মহাবীর _________ নামে পরিচিত হন।
উত্তরঃ কেবলিন।
৯. সম্রাট দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্তের আমলে ________ মুদ্রা প্রথম চালু করা হয়।
উত্তরঃ রূপোর।
১০. গুপ্তযুগের চিত্রশিল্পের শ্রেষ্ঠ উদাহরণ হলো মধ্য ভারতের _______ গুহার ছবিগুলি।
উত্তরঃ অজন্তা।
৩। এক কথায় উত্তর দাও (যেকোনো ৯টি): (১x৯=৯)
১. ত্রিপিটক কোন ভাষায় রচিত?
উত্তর: পালি ভাষায়।
২. গৌতম বুদ্ধের মহাপরিনির্বাণ কোথায় হয়েছিল?
উত্তর: কুশিনগরে।
৩. বৈদিক যুগকে প্রধানত কয়টি ভাগে ভাগ করা যায় এবং কী কী?
উত্তর: দুটি ভাগে: আদিবৈদিক যুগ ও পরবর্তী বৈদিক যুগ।
৪. 'রাজা' শব্দের আক্ষরিক অর্থ কী?
উত্তর: নেতা।
৫. মহাস্থানগড় বর্তমানে কোন দেশে অবস্থিত?
উত্তর: বাংলাদেশের বাগুড়া জেলায়।
৬. কুশান যুগে 'দেবকুল' বলতে কী বোঝাত?
উত্তর: কুশান যুগের সম্রাট ও দেবতাদের একই বোঝানোর জন্য শাসকরা যে সংস্থা প্রতিষ্ঠান করেন, তা দেবকুল নামে পরিচিত ছিল।
৭. ফা-হিয়েনের মতে ভারতবর্ষের শ্রেষ্ঠ নগর কোনটি ছিল?
উত্তর: পাটলিপুত্র।
৮. প্রাচীন ভারতের জলসেচ প্রকল্পগুলি কী নামে পরিচিত ছিল?
উত্তর: সেতু।
৯. সুশ্রুত একজন বিখ্যাত ____ ছিলেন।
উত্তর: শল্য চিকিৎসক।
১০. পুরান সাহিত্যে 'যবন' কাদের বলা হতো?
উত্তর: ব্যাক্ট্রিয়ার গ্রিক রাজাদের।
১১. সম্রাট অশোকের পিতার নাম কী ছিল?
উত্তর: বিন্দুসার।
১২. সাতবাহন বংশের প্রতিষ্ঠাতা কে ছিলেন?
উত্তর: শিমুখ।
১৩. কুশান আমলে দামি বস্ত্র তৈরির জন্য কোন অঞ্চল বিখ্যাত ছিল?
উত্তর: বারাণসী ও মথুরা।
১৪. নারীদের কী নামে ডাকা হতো, যখন তারা উপাধ্যায় হতেন?
উত্তর: উপাধ্যায়।
১৫. তক্ষশীলা মহাবিহারের একজন প্রসিদ্ধ ছাত্রের নাম উল্লেখ করো।
উত্তর: জীবক।
৩. নির বাক্যগুলির কোনটি ঠিক কোনটি ভুল লেখো (যেকোনো ১০টি): (১x১০=১০)
১. নালন্দা মহাবিহারের একজন উল্লেখযোগ্য পণ্ডিত ছিলেন শীলভদ্র।
উত্তর: ঠিক
২. পল্লবরা চলন্ত ঘোড়া থেকে পিছন দিকে তীর নিক্ষেপের কৌশল চালু করেছিল।
উত্তর: ঠিক
৩. খ্রিস্টপূর্ব পঞ্চম শতকের শেষ দিকে ব্যাক্ট্রিয়া গ্রিক শাসক সেলুকাসের অধীনে ছিল।
উত্তর: ভুল
৪. ১৯৫৭ খ্রিস্টাব্দে ভীমবেটকায় একাধিক গুহা আবিষ্কৃত হয়।
উত্তর: ঠিক
৫. সিদ্ধার্থ ৩০ বছর বয়সে সংসার ত্যাগ করে তপস্যা করতে গিয়েছিলেন।
উত্তর: ভুল
৬. সম্রাট অশোক তার জীবনে মাত্র একটি যুদ্ধ করেছিলেন।
উত্তর: সত্য
৭. প্রাচীন চিনের শাসকরা নিজেদেরকে দেবতার সন্তান বলে দাবি করতেন।
উত্তর: সত্য
৮. খ্রিস্টপূর্ব ৫০০ অব্দ নাগাদ দ্বিতীয় নগরায়নের সূচনা হয়।
উত্তর: ভুল
৯. ফা-হিয়েন গুপ্ত সম্রাট সমুদ্রগুপ্তের রাজত্বকালে ভারতে এসেছিলেন।
উত্তর: ভুল
১০. 'মণিমেখলাই' একটি তামিল মহাকাব্য।
উত্তর: ঠিক
১১. জাতিভেদ প্রথার কঠোরতা চিকিৎসা বিজ্ঞান চর্চায় বাধা সৃষ্টি করেছিল।
উত্তর: ঠিক
---৪. নিচের প্রশ্নগুলির উত্তর দু-তিনটি বাক্যে দাও (যেকোনো ৬টি): (২x৬=১২)
১. গুরুকুল শিক্ষা ব্যবস্থা বলতে কী বোঝানো হয়?
উত্তর: বৈদিক যুগের শিক্ষা ব্যবস্থায় ছাত্ররা গুরুগৃহে থেকে পড়াশোনা করত। এই শিক্ষাপদ্ধতিকে গুরুকুল ব্যবস্থা বলা হতো।
২. 'সংখ্যায়ন' কী? এটি কাদের গণিত চর্চার সঙ্গে যুক্ত?
উত্তর: ভারতীয় উপমহাদেশে গণিত চর্চার ব্যাপক প্রচলন ছিল। জৈন ও বৌদ্ধ পণ্ডিতরা গণিত চর্চা করতেন। বৌদ্ধদের গণিত বিজ্ঞান পাটিগণিত, বীজগণিত ও জ্যামিতি নিয়ে তৈরি হয়েছিল। জৈনরা এই গণিতবিদ্যাকে 'সংখ্যায়ন' বলতেন।
৩. কেন মিশরকে "নীলনদের দান" বলা হয়?
উত্তর: মিশর নীলনদের নিম্ন অববাহিকায় অবস্থিত একটি দেশ। এর মরু প্রকৃতির জলবায়ুর কারণে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ খুবই কম। মিশরের পশ্চিমে সাহারা মরুভূমি থাকলেও দেশের মধ্য দিয়ে নীলনদ প্রবাহিত হওয়ায় মিশর সম্পূর্ণ মরুভূমিতে পরিণত হতে পারেনি। এই কারণে মিশরকে নীলনদের দান বলা হয়।
৪. গুপ্ত ও গুপ্ত-পরবর্তী কালের 'অগ্রহার' ব্যবস্থাটি ব্যাখ্যা করো।
উত্তর: গুপ্ত ও গুপ্ত-পরবর্তী কালে বৌদ্ধবিহার, অন্যান্য মন্দির বা ব্রাহ্মণকে যে নিষ্কর জমি দান করা হতো, তাকে অগ্রহার ব্যবস্থা বলা হত। এই ব্যবস্থায় বেশিরভাগ ক্ষেত্রে জমি অর্থের বিনিময়ে কেনা হতো এবং পরে তা দান করা হতো। এই ধরনের জমি হস্তান্তর করা যেত না, কিন্তু বংশ পরম্পরায় ভোগ করা যেত।
৫. জৈন ধর্মের ত্রিরত্ন সম্পর্কে লেখো।
উত্তর: সৎ বিশ্বাস, সৎ জ্ঞান ও সৎ আচরণের উপর জৈনরা জোর দিতেন। এই তিনটিকে একসঙ্গে জৈন ধর্মের ত্রিরত্ন বলা হত।
৬. বৌদ্ধ ধর্মানুসারে 'আর্য সত্য' বলতে কী বোঝায়?
উত্তর: বোধি লাভ করার পর বুদ্ধদেব মানুষের মুক্তির উপায় হিসেবে যে চারটি সত্য পালনের উপদেশ দেন, তা আর্য সত্য বা চতুরার্য সত্য নামে পরিচিত। এই চারটি উপদেশ একসঙ্গে চতুরার্য সত্য নামে অভিহিত হয়। চতুরার্য সত্যগুলি হল: মানুষের জীবনে দুঃখ আছে, দুঃখের কারণ আছে, দুঃখ দূর করা যায়, এবং দুঃখ দূর করার জন্য সঠিক মার্গ বা পথ আছে। দুঃখ দূর করার জন্য এই মার্গটি হলো অষ্টাঙ্গিক মার্গ।
৭. ঋগ্বৈদিক যুগের চতুর্বর্ণ প্রথার বর্ণনা দাও।
উত্তর: ঋগ্বেদ অনুযায়ী, সমাজে প্রথম থেকেই চতুর্বর্ণপ্রথা বিশেষভাবে প্রচলিত ছিল বলা যায় না। সম্ভবত ঋগ্বেদে বর্ণ বলতে মানুষের গায়ের রংকেই বোঝানো হতো। ঋগ্বেদের শেষের দিকে সমাজে ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য ও শূদ্র শ্রেণীর অস্তিত্বের কথা বলা হয়। ব্রাহ্মণরা যজ্ঞ, পড়াশোনা ও শিক্ষাদানের কাজ করত; ক্ষত্রিয়রা রাজ্য শাসন ও প্রজাদের নিরাপত্তার দায়িত্ব নিত; বৈশ্যরা কৃষিকাজ, পশুপালন ও ব্যবসা-বাণিজ্যের কাজে যুক্ত থাকত এবং শূদ্ররা ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয় ও বৈশ্যদের সেবায় নিযুক্ত থাকত।
৮. গৌতম বুদ্ধের জন্মসাল ও জন্মস্থান উল্লেখ করো।
উত্তর: খ্রিস্টপূর্ব ৫৬৬ অব্দে নেপালের তরাই অঞ্চলের কপিলাবস্তুর শাক্য বংশে গৌতম বুদ্ধ জন্মগ্রহণ করেন।
৯. সম্রাট অশোক ভারতীয় উপমহাদেশের বাইরে কোন কোন স্থানে বৌদ্ধ ধর্ম প্রচারের জন্য দূত প্রেরণ করেছিলেন?
উত্তর: সম্রাট অশোক ভারতীয় উপমহাদেশের বাইরে সিরিয়া, মিশর, ম্যাসিডন ও সিংহলে দূত পাঠিয়েছিলেন।
১০. শক ও কুশানরা ভারতীয় উপমহাদেশে কোন ধরনের পোশাক চালু করেছিল?
উত্তর: শক ও কুশানরা ভারতীয় উপমহাদেশে জামা, পাজামা, লম্বা জোব্বা, বেল্ট, জুতো প্রভৃতি পোশাক চালু করেছিল।
১১. মহাজনপদের যুগে শ্রেষ্ঠ ধান কোনটি ছিল এবং এর চাষ কোন অঞ্চলে বেশি হতো?
উত্তর: মহাজনপদের আমলে শালি ধান ছিল সেরা। এই ধানের চাষ মগধে বেশি হতো।
১২. 'দ্বিতীয় নগরায়ন' বলতে কী বোঝায়?
উত্তর: প্রাচীন ভারতের হরপ্পা সভ্যতায় যে নগরকেন্দ্রিক সভ্যতা গড়ে উঠেছিল, তাকে প্রথম নগরায়ন বলা হয়। এর হাজার বছরেরও পরে খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতাব্দী নাগাদ গঙ্গা নদীর উপত্যকা অঞ্চলে যে নগর সভ্যতা গড়ে ওঠে, তাকে দ্বিতীয় নগরায়ন বলা হয়।
১৩. নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়ে কোন কোন বিদেশি দেশের শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা করতে আসতেন?
উত্তর: চীন, তিব্বত, কোরিয়া, সুমাত্রা, জাভা প্রভৃতি দেশ থেকে ছাত্ররা নালন্দায় পড়তে আসত।
১৪. কুশান বংশের শ্রেষ্ঠ শাসক কে ছিলেন এবং তিনি কবে সিংহাসনে আরোহণ করেন?
উত্তর: কুশান বংশের শ্রেষ্ঠ সম্রাট ছিলেন প্রথম কনিষ্ক। তিনি ৭৮ খ্রিস্টাব্দে সিংহাসনে বসেন।
১৫. প্রাচীন ভারতের তাম্রলিপ্ত বন্দর নগরীটি আর কী কী নামে পরিচিত ছিল?
উত্তর: প্রাচীন ভারতের তাম্রলিপ্ত বন্দর নগরীটি তাম্রলিপ্ত ও দামলিপ্ত নামেও পরিচিত ছিল।
---৫. নিচের প্রশ্নগুলির উত্তর চার-পাঁচটি বাক্যে দাও (যেকোনো ৫টি): (৩x৫=১৫)
১. 'দশ রাজার যুদ্ধ' সম্পর্কে একটি সংক্ষিপ্ত টীকা লেখো।
উত্তর: ঋগ্বেদে অনেক যুদ্ধের কথা আছে, তার মধ্যে বিখ্যাত হল দশ রাজার যুদ্ধ। ভরত গোষ্ঠীর রাজা ছিলেন সুদাস। তার সঙ্গে অন্যান্য দশটি গোষ্ঠীর রাজাদের যুদ্ধ হয়েছিল। সুদাস দশ রাজার জোটকে হারিয়ে দিয়েছিলেন। এর ফলে ভরত গোষ্ঠীর রাজনৈতিক ক্ষমতা বেড়েছিল। নদীর জলের উপর অধিকার বজায় রাখার জন্য সুদাস হয়তো নদীর এক উপরের একটি বাঁধ ভেঙে দিয়েছিলেন। এই যুদ্ধের সঙ্গে পরবর্তীকালের মহাভারতের কুরুক্ষেত্র যুদ্ধের কিছুটা মিল রয়েছে।
২. সম্রাট অশোকের জীবনে কলিঙ্গ যুদ্ধের প্রভাব আলোচনা করো।
উত্তর: কলিঙ্গ যুদ্ধের ভয়াবহতার ফলে অশোকের মনের পরিবর্তন ঘটে। এরপর থেকেই তিনি প্রজাদের ঐক্যবদ্ধ করতে থাকেন। এই যুদ্ধের পর অশোক আর অন্য কোনো যুদ্ধ করেননি, বরং বৌদ্ধ ধর্মের দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিলেন। অশোক কলিঙ্গ যুদ্ধের পর প্রজাদের মধ্যে ধম্মনীতি প্রচার করেন। এটি কোনো বিশেষ ধর্ম না হলেও এর মূল কথা ছিল অহিংসা, প্রাণী হত্যা বন্ধ করা, দয়া, দান, সত্য কথা বলা, গুরুজনদের মেনে চলা প্রভৃতি। এর মাধ্যমে অশোক প্রজাদের সন্তানতুল্য মনে করতেন। তার ধর্মের মুখ্য উদ্দেশ্য ছিল মানুষের পারিবারিক ও সমাজ জীবনের উন্নতি সাধন।
৩. ষোড়শ মহাজনপদের আমলে নগরগুলির অবস্থা কেমন ছিল?
উত্তর: ষোড়শ মহাজনপদের আমলে নগরগুলি আকারে গ্রামীণ বসতির তুলনায় বড় ছিল। প্রধানত শাসক ও ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত লোকেরা নগরে বাস করত। তবে এরা নিজেদের খাদ্য নিজেরা উৎপাদন করতে পারত না, তাই খাদ্যের জন্য তাদের গ্রামের উপর নির্ভরশীল থাকতে হতো।
৪. 'গুহাবাস' বলতে কী বোঝো?
উত্তর: মৌর্য সম্রাট অশোক ও তার পরবর্তী মৌর্য সম্রাটরা আজীবিকদের জন্য পাহাড় কেটে কৃত্রিম গুহা বানাতেন। এগুলি গুহাবাস নামে পরিচিত। এইসব গুহায় সন্ন্যাসীরা বসবাস করতেন।
৫. 'ইন্ডিকা' গ্রন্থ সম্পর্কে একটি সংক্ষিপ্ত টীকা লেখো।
উত্তর: চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যের আমলে গ্রিক শাসক সেলুকাসের রাষ্ট্রদূত রূপে মেগাস্থিনিস পাটলিপুত্রে আসেন। এই সময় ভারত সম্পর্কে তিনি তার বিবরণ লিপিবদ্ধ করেন ইন্ডিকা নামক গ্রন্থে। যদিও মূল গ্রন্থটির অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি, তবে গ্রন্থটির নানা অংশ পরবর্তী গ্রিকো-রোমান লেখকদের বিবরণে পাওয়া গেছে। এগুলি থেকে ভারতীয় ইতিহাসের নানা তথ্য পাওয়া যায়, যার মধ্যে বিশেষ উল্লেখযোগ্য হল পাটলিপুত্র নগর সম্পর্কিত তথ্য।
৬. 'রেশম পথ' (Silk Road) সম্পর্কে একটি টীকা লেখো।
উত্তর: রোম সাম্রাজ্যে চীনা রেশমের খুব চাহিদা ছিল। চীন থেকে কাজগড় হয়ে বিভিন্ন পথে রোম ও ভূমধ্যসাগরের পূর্ব এলাকায় রেশম পৌঁছাতো। চীন থেকে রোম সাম্রাজ্যের স্থলপথে রেশম ব্যবসার এই পথকে রেশম পথ বলা হয়। তবে সেই সময় এই পথের নাম রেশম পথ ছিল না, পরবর্তী খ্রিস্টীয় ১৯ শতকে এই পথকে রেশম পথ বলা হয়।
৭. ভারতীয় উপমহাদেশ ও পারস্যের মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থা সম্পর্কে আলোচনা করো।
উত্তর: ভারতীয় উপমহাদেশের উত্তর-পশ্চিম দিকে গান্ধার অবস্থিত। গান্ধারের মধ্য দিয়ে ভারতীয় উপমহাদেশের সঙ্গে পারস্যের যোগাযোগ গড়ে উঠেছিল। খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতকের দ্বিতীয় ভাগে পারস্যে হাকামনীশীয় বংশের শাসকরা রাজত্ব করতেন। এই বংশের শ্রেষ্ঠ সম্রাট ছিলেন প্রথম দরাইবোস। সম্রাট প্রথম দরাইবোস প্রথম গান্ধার অভিযান করেন। গান্ধার ছাড়াও উপমহাদেশের বেশ কিছু অংশে তার শাসন ছিল। নিম্ন সিন্ধু এলাকাও তার অধিকারে ছিল। সম্রাট প্রথম দরাইবোসের শিলালিপিতেই 'হিদুস' শব্দটি পাওয়া যায়। তারা সিন্ধুকে 'হিদুস' বলত।
৮. প্রাচীন ভারতের বিজ্ঞান চর্চায় আর্যভট্টের অবদান আলোচনা করো।
উত্তর: প্রাচীন ভারতের বিজ্ঞান চর্চার ক্ষেত্রে আর্যভট্ট মৌলিক অবদান রেখেছেন। তিনি গণিতকে একটি আলাদা বিষয় হিসেবে তুলে ধরেন। তিনি শূন্যকে আলাদা সংখ্যা হিসেবে ব্যবহার করেন। এছাড়া সময়, গ্রহ-নক্ষত্র আলোচনা করেন। তার মতে পৃথিবী গোলাকার এবং নিজের কক্ষপথে ঘুরছে। চন্দ্রগ্রহণের কারণও তিনি ব্যাখ্যা করেন। তৎকালীন সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে তার মতামত ছিল আধুনিক।
৯. গুপ্তযুগে সমাজে বর্ণপ্রথা কেমন ছিল?
উত্তর: গুপ্তযুগের সমাজে বর্ণাশ্রম প্রথা চালু ছিল, যদিও সকলে কঠোরভাবে এই প্রথা মানত না। তাছাড়া এই যুগে সমাজে নিচুতলার মানুষদের প্রতি ব্রাহ্মণরা ভালো ব্যবহার করতেন না। একই অপরাধের জন্য ব্রাহ্মণ ও শূদ্রের আলাদা আলাদা শাস্তি হতো। চণ্ডালরা গ্রাম বা নগরের মধ্যে থাকতে পারত না।
১০. 'এলাহাবাদ প্রশস্তি' সম্পর্কে একটি টীকা লেখো।
উত্তর: এলাহাবাদের কৌশাম্বী গ্রামে গুপ্ত সম্রাট সমুদ্রগুপ্তের একটি লিপি পাওয়া গেছে। এই লিপিতে সমুদ্রগুপ্ত সম্পর্কে শুধু ভালো কথাই লেখা আছে বলে একে এলাহাবাদ প্রশস্তি বলা হয়। এই এলাহাবাদ প্রশস্তিটি রচনা করেছিলেন সমুদ্রগুপ্তের সভাকবি হরিসেন। এই প্রশস্তি থেকে সমুদ্রগুপ্তের যুদ্ধ, রাজ্য জয় প্রভৃতি সম্বন্ধে জানা যায়।
১১. ভীমবেটকা গুহার চিত্রকর্ম সম্পর্কে আলোচনা করো।
উত্তর: মধ্যপ্রদেশের ভোপাল থেকে কিছু দূরে বিন্ধ্য পর্বতের জঙ্গলে ভীমবেটকায় অনেকগুলি গুহার সন্ধান পাওয়া গেছে। এই গুহায় পুরনো পাথরের যুগে বসবাসকারী আদিম মানুষেরা অনেক ছবি এঁকেছে। এই ছবিগুলির প্রায় সবগুলিই শিকারের ছবি। ছবিগুলিতে আছে নানারকমের বন্যপশু, পাখি, মাছ, কাঠবিড়ালি, কুকুর প্রভৃতি। ছবিগুলিতে দেখা যায় মানুষ একা বা দল বেঁধে শিকার করছে। হাতে ও পায়ে গয়না ও কারো মুখে মুখোশ পরা আছে। ছবিগুলিতে সবুজ, হলুদ, সাদা ও লাল রঙের ব্যবহার দেখা যায়।
৬. নিচের প্রশ্নগুলির উত্তর আট-দশটি বাক্যে দাও (যেকোনো ৩টি): (৫x৩=১৫)
১. প্রাচীন ভারতের চিকিৎসাশাস্ত্র সম্পর্কে একটি বিশদ আলোচনা করো।
উত্তর: প্রাচীনকাল থেকেই ভারতীয় উপমহাদেশে চিকিৎসাশাস্ত্র সম্পর্কিত গ্রন্থ রচিত হতে থাকে।
ব্রাহ্মণ ও বৌদ্ধদের ভূমিকা: ব্রাহ্মণ ও বৌদ্ধ ধর্মগুরুরা তাদের নানা লেখায় ওষুধ ও অস্ত্রোপচারের কথা উল্লেখ করেছেন। চিকিৎসাশাস্ত্র বিষয়ক দুটি গুরুত্বপূর্ণ বই হলো চরক সংহিতা ও সুশ্রুত সংহিতা। চিকিৎসার গুরুত্বের কারণেই প্রাচীন ভারতের চিকিৎসাশাস্ত্রকে 'উপবেদ' বলা হতো।
গুপ্তযুগের চিকিৎসাশাস্ত্র: গুপ্ত আমলে চিকিৎসা বিষয়ক বই লেখা হতো। এইসব বইয়ের অন্যতম লেখক ছিলেন বাঘভট।
পশু চিকিৎসা: গুপ্ত ও গুপ্ত-পরবর্তী কালে পশু চিকিৎসা সম্পর্কিত বইও লেখা হতে থাকে।
চিকিৎসা বিজ্ঞান চর্চায় সমস্যা: সমাজে জাতিভেদ প্রথার কঠোরতার ফলে চিকিৎসাবিজ্ঞান চর্চায় নানা সমস্যা দেখা দিয়েছিল। প্রচলিত বর্ণাশ্রম প্রথার সঙ্গে চিকিৎসাবিদ্যার বিরোধিতা তৈরি হয়।
২. প্রাচীন ভারতের পরিবেশ চিন্তা কেমন ছিল, তা আলোচনা করো।
উত্তর: প্রাচীন ভারতে পরিবেশ চিন্তার মূল বিষয় ছিল বন ও বনের পরিবেশ, পশুপাখি ও গাছপালা।
বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ: প্রাচীন ভারতে বনাঞ্চলের ক্ষতি করলে কঠোর শাস্তির বিধান দেওয়া হতো। তাছাড়া বনজঙ্গল ও বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের উপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হতো।
বৃক্ষরোপণ: খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতকে কৃষিকাজের পাশাপাশি নগরগুলির উন্নতি ঘটলে জঙ্গল বা অরণ্য কাটা শুরু হয়। তাই বিভিন্ন সময়ে গাছ বাঁচানোর জন্য গাছ বাঁচানোর নানা উপায় হিসাবে বৃক্ষ পূজার প্রচলন হয় এবং বৃক্ষরোপণ করা হয়।
৩. মৌর্য সাম্রাজ্যের পতনের প্রধান কারণগুলি আলোচনা করো।
উত্তর: মৌর্য সাম্রাজ্যের পতনের মূল কারণগুলি হলো:
ব্রাহ্মণ শ্রেণীর ক্ষোভ: ধম্মনীতির প্রয়োগ দ্বারা পশুবলি নিষিদ্ধকরণ, সকলের ক্ষেত্রে দণ্ড সমতা ও ব্যবহার সমতা নীতির প্রয়োগ এবং ধম্ম মহামাত্র নামক কর্মচারীর নিয়োগ - সম্রাট অশোক গৃহীত এইসব ব্যবস্থা দিয়ে ব্রাহ্মণ সম্প্রদায়ের সম্মান ও মর্যাদা এবং বৃত্তিমূলক অধিকারকে ক্ষুণ্ন করেছিল। এতে ব্রাহ্মণরা ক্ষুব্ধ হয়।
অশোক অনুষ্ঠিত অহিংস নীতি: অশোক তার অহিংস নীতির কারণে যুদ্ধ ত্যাগ করে সেনাবাহিনীকে দুর্বল করে তোলেন। ফলে তার সেনাবাহিনী অভ্যন্তরীণ বিদ্রোহ ও বিদেশী শত্রুর আক্রমণ রোধে ব্যর্থ হয়।
সাম্রাজ্যের বিশালতা ও প্রশাসনিক দুর্বলতা: বিশাল সাম্রাজ্যকে কেন্দ্রীয় প্রশাসন ঠিকমতো নিয়ন্ত্রণ করতে পারত না। ফলে আঞ্চলিক বিচ্ছিন্নতা বৃদ্ধি পায়। আমলাতন্ত্র ছিল কেন্দ্রের নিয়ন্ত্রণে, তাদের আনুগত্য ছিল রাজার প্রতি। রাজার পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে আমলাদেরও পরিবর্তন ঘটত, ফলে রাষ্ট্রের প্রশাসনিক ভিত্তি দুর্বল ছিল।
অর্থনৈতিক সংকট: অশোকের জনকল্যাণমূলক কর্মকাণ্ডে, স্তম্ভ নির্মাণে এবং মৌর্য সামরিক বাহিনী ও কর্মচারীদের বেতন খাতে বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় হয়। ব্যয়ের অনুপাতে রাজকোষে পর্যাপ্ত রাজস্ব জমা না হওয়ায় অশোকের পরবর্তী মৌর্য রাজাদের আমলে তীব্র অর্থনৈতিক সংকট দেখা দেয়, যা মৌর্য সাম্রাজ্যের স্থিতিশীলতাকে বিপন্ন করে।
অশোকের উত্তরাধিকারীদের দুর্বলতা: উত্তরাধিকারীদের দুর্বলতা মৌর্য সাম্রাজ্যকে দুর্বল করে তোলে। মৌর্য সাম্রাজ্যের অভ্যন্তরীণ দুর্বলতার সুযোগে ব্যাক্ট্রিয় গ্রিক জাতি উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত দিয়ে ভারতে প্রবেশ করে এবং রাজধানী পাটলিপুত্র পর্যন্ত অগ্রসর হয়। এই বিদেশী আক্রমণের সুযোগ নিয়ে সেনাপতি পুষ্যমিত্র শুঙ্গ তার প্রভু শেষ মৌর্য সম্রাট বৃহদ্রথকে হত্যা করে সিংহাসন দখল করলে মৌর্য বংশ তথা মৌর্য সাম্রাজ্যের অবসান ঘটে।
৪. গুপ্ত ও বাকাটক শাসন ব্যবস্থার মধ্যে একটি তুলনামূলক আলোচনা উপস্থাপন করো।
উত্তর:গুপ্ত ও বাকাটক শাসন ব্যবস্থার তুলনামূলক আলোচনা নিচে দেওয়া হলো:
উপাধি: গুপ্ত শাসন ব্যবস্থায় নিজেদের ক্ষমতার বিশালতা প্রমাণের জন্য গুপ্ত সম্রাটরা 'মহারাজাধিরাজ' উপাধি নিতেন। বাকাটক শাসকেরা কেবলমাত্র 'মহারাজা' উপাধি নিতেন।
প্রদেশ: গুপ্ত শাসনে প্রদেশকে 'ভুক্তি' ও 'দেশ' বলা হতো। বাকাটক শাসনে প্রদেশকে 'রাজ্য' বলা হতো।
প্রাদেশিক শাসন: গুপ্ত শাসনে প্রদেশের শাসনভার রাজপুত্রদের হাতে থাকত। বাকাটক শাসনে প্রদেশের শাসকদের 'সেনাপতি' বলা হতো।
জেলা: গুপ্ত শাসনে জেলাকে 'বিষয়' বলা হতো। বাকাটক শাসনে জেলাকে 'পট্ট' বা 'আহার' বলা হতো।
৫. হিউয়েন সাঙের (সুয়ানজাং) বিবরণ অনুসারে ভারতীয় উপমহাদেশের সমাজ ও পরিবেশ সম্পর্কে আলোচনা করো।
উত্তর: সুয়ানজাং ছিলেন চীন দেশের পর্যটক, যিনি হর্ষবর্ধনের রাজত্বকালে ভারতে এসেছিলেন। তিনি ভারতবর্ষকে 'ইন্তু' বলে অভিহিত করেছেন।
রাজ্য ও রাজা: সুয়ানজাং বলেছেন যে ইন্তুতে ৮০টি রাজ্য ছিল। প্রত্যেক রাজ্যের রাজা থাকলেও তারা ছিলেন সম্রাটের খুব অনুগত। রাজারা জনগণের সুখ-সুবিধার কথা ভাবতেন।
আবহাওয়া: সুয়ানজাং বলেছেন ইন্তু মূলত গরমের দেশ, তবে এখানে নিয়মিত বৃষ্টি হয়। উত্তর ও পূর্ব অঞ্চলের মাটি খুবই উর্বর এবং দক্ষিণ অঞ্চল ছিল জঙ্গলে ঢাকা। এখানের প্রধান ফসল হলো ধান ও গম।
শহর ও গ্রাম: তিনি বলেছেন গ্রামের বাড়িগুলির দেওয়াল ও মেঝে মাটি দিয়ে তৈরি। শহরের বাড়িগুলি ইট ও বালি দিয়ে তৈরি হতো এবং বাড়ির বারান্দা তৈরি হতো কাঠ দিয়ে। জনগণের মধ্যে জাতিভেদ ছিল।
৬. প্রাচীন ভারতের চিকিৎসা বিজ্ঞানের উন্নতিতে চরক সংহিতা ও সুশ্রুত সংহিতার গুরুত্ব আলোচনা করো।
উত্তর: প্রাচীন ভারতে বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখার উন্নতি ও বিকাশ ঘটে। এর মধ্যে চিকিৎসাবিজ্ঞান ছিল বিশেষ উল্লেখযোগ্য। এক্ষেত্রে চরক ও সুশ্রুত সংহিতা বিখ্যাত।
চরক সংহিতা: 'চরক' মানে ঘুরে বেড়ানো বা চড়ে বেড়ানো। চরক সংহিতা হলো বিভিন্ন স্থানে ঘুরে বেড়ানো বৈদ্য বা চিকিৎসকদের অভিজ্ঞতার সংকলন। এই গ্রন্থে প্রায় ৭০০টি ঔষধি গাছের এবং বিভিন্ন রোগব্যাধি ও তার লক্ষণের বর্ণনা আছে। এটি আদর্শ চিকিৎসা কেন্দ্র বা হাসপাতালের রূপরেখাও এই গ্রন্থে বর্ণিত আছে।
সুশ্রুত সংহিতা: 'সুশ্রুত' কথাটির মানে ভালো করে শোনা। সুশ্রুত সংহিতা গ্রন্থে শল্য চিকিৎসা বিষয়ে বিশেষত শব ব্যবচ্ছেদের কথা বলা হয়েছে। এই গ্রন্থে কারিগরদের ও হাতের কাজকে প্রশংসা করা হয়েছে, বলা হয়েছে 'হাতি প্রধানতম যন্ত্র'। চরক এবং সুশ্রুত কুশান আমলের বিখ্যাত চিকিৎসক ছিলেন। তারা কুশান সম্রাট কনিষ্কের সভাসদ ছিলেন। চরক ও সুশ্রুত সংহিতা ছিল তাদের অন্যতম রচিত গ্রন্থ এবং প্রাচীন ভারতের চিকিৎসাবিজ্ঞানের উৎকর্ষতার পরিচয়বাহী।
No comments:
Post a Comment