Breaking

Tuesday, September 2, 2025

Class 6 3rd Unit Test History Questions Pdf Download-তৃতীয় পর্যায় ক্রমিক মুল্যায়ন Class 6 ইতিহাস

Class 6 3rd Unit Test History Questions Pdf Download-তৃতীয় পর্যায় ক্রমিক মুল্যায়ন Class 6 ইতিহাস

Class 6 3rd Unit Test History Questions Pdf

WB e-Learning,

        প্রিয় ছাত্রছাত্রীরা, তোমাদের কষ্ট লাঘব করতে নিয়ে চলে আসলাম তৃতীয় পর্যায়ক্রমিক মুল্যায়ন Class 6 ইতিহাসের নমুনা প্রশ্নপত্র। এই প্রশ্নপত্রটি তোমাকে পরীক্ষার পূর্ব জ্ঞান অর্জনে ও তোমার ভিতরে থাকা 3rd Unit Test সম্পর্কে যে ভীতি রয়েছে তা দূর করতে সচেষ্ট হবে। Class 6 3rd Unit Test History Questions Pdf Downlod লিংক নেচে দেওয়া রয়েছে। এবং তোমার মতামত অবশ্যই শেয়ার করবে। 


তৃতীয় পর্যায় ক্রমিক মুল্যায়ন Class 6 ইতিহাস


১) সঠিক উত্তরটি বেছে নিয়ে লেখো (MCQ):


১. তাম্রলিপ্ত বন্দর অবস্থিত ছিল—

(A) উত্তরের কোঙ্কন উপকূলে

(B) মালবার উপকূলে

(C) কাবেরী বদ্বীপ এলাকায়

(D) পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুকে

👉 Ans: (D) পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুকে


২. সেলিউকাসের দূত হয়ে মৌর্য দরবারে এসেছিলেন—

(A) মেগাস্থিনিস

(B) ডায়ামাকাস

(C) ফাসিয়ান

(D) প্রথম অ্যান্টিয়োকস

👉 Ans: (A) মেগাস্থিনিস


৩. উপবেদ বলা হত—

(A) রামায়ণকে

(B) মহাভারতকে

(C) চিকিৎসাশাস্ত্রকে

(D) সংগম সাহিত্যকে

👉 Ans: (C) চিকিৎসাশাস্ত্রকে


৪. কম্বনের রামায়ণে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব হল—

(A) রাম

(B) রাবণ

(C) লক্ষ্মণ

(D) সীতা

👉 Ans: (B) রাবণ


৫. ইন – তু হলো—

(A) ভারতবর্ষ

(B) চিনা দেবতা

(C) মগধ

(D) চিনা নদী

👉 Ans: (A) ভারতবর্ষ

৬. অর্থশাস্ত্র – র লেখক হলেন—

(A) বাণভট্ট

(B) কলহন

(C) কৌটিল্য

(D) হরিষেণ

👉 Ans: (C) কৌটিল্য


৭. বজ্জিদের রাজধানী কোথায় ছিল?

(A) অবন্তি

(B) পাবা

(C) কোশল

(D) বৈশালি

👉 Ans: (D) বৈশালি


৮. দশ রাজার যুদ্ধে জয়ী হয়েছিলেন—

(A) ভরত

(B) সুদাস

(C) বিক্রমাদিত্য

(D) অশোক

👉 Ans: (B) সুদাস


৯. ইন্দো – আর্য ভাষার সব থেকে পুরানো সাহিত্য হল—

(A) ঋগবেদ

(B) ব্রাক্ষ্মণ

(C) মহাভারত

(D) বেদান্ত

👉 Ans: (A) ঋগবেদ


১০. গাথা সপ্তসতি লেখা হয় কোন ভাষায়?

(A) সংস্কৃত ভাষায়

(B) প্রাকৃত ভাষায়

(C) পালি ভাষায়

(D) তামিল ভাষায়

👉 Ans: (B) প্রাকৃত ভাষায়


১১. মহাখত্রপ উপাধি ছিল কার?

(A) সমুদ্রগুপ্তের

(B) দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্তের

(C) রুদ্রদামনের

(D) কনিষ্কের

👉 Ans: (C) রুদ্রদামনের


১২. মিশরের শাসকদের বলা হতো—

(A) রাজা

(B) সম্রাট

(C) সুলতান

(D) ফেরাও

👉 Ans: (D) ফেরাও


১৩. মৌর্য বংশের পতন ঘটে কবে?

(A) 185 খ্রিষ্ট পূর্বাব্দে

(B) 186 খ্রিষ্ট পূর্বাব্দে

(C) 187 খ্রিষ্টপূর্বাব্দে

(D) 189 খ্রিষ্টপূর্বাব্দে

👉 Ans: (C) 187 খ্রিষ্টপূর্বাব্দে


১৪. গুপ্ত এবং গুপ্ত পরবর্তী আমলে ধর্মীয় উদ্দেশ্যে জমি দান করাকে কী বলা হত?

(A) অগ্রহার ব্যবস্থা

(B) জমিদারি

(C) নিষ্কর জমি

(D) ভোগদখল

👉 Ans: (A) অগ্রহার ব্যবস্থা

২) শূন্যস্থান পূরণ করো:

১. হেরোডোটাসের মতে ইন্দুস ছিল পারসিক সাম্রাজ্যের একটি ___________।

উত্তরঃ প্রদেশ। 


২. জীবক ছিলেন রাজ __________।

উত্তরঃ বৈদ্য


৩. গাথা সপ্তশতী গ্রন্থটি সংকলন করেন ______________।

উত্তরঃ সাতবাহন রাজা হাল  বা শালিবাহন।


৪. কনিষ্ক _________ খ্রিস্টাব্দে কুষাণদের শাসক হন।

উত্তরঃ ৭৮ খ্রিস্টাব্দে।


৫. দিগম্বরদের নেতা ছিলেন __________।

উত্তরঃ ভদ্রবাহু


৩) এককথায় উত্তর দাও:


১. প্রাচীন ভারতে জলসেচ প্রকল্পগুলিকে কী বলা হত?

Ans: সেতু


২. শুশ্রুত কে ছিলেন?

Ans: শুশ্রুত একজন শল্য চিকিৎসক ছিলেন।


৩. পুরাণ সাহিত্যে যবন কাদের বলা হত?

Ans: পুরাণ সাহিত্যে যবন বলা হত ব্যাকট্রিয়ার গ্রিকরাজাদের।


৪. ফাসিয়ানের মতে, দেশের সেরা নগর কোনটি?

Ans: ফাসিয়ানের মতে, দেশের সেরা নগর পাটলিপুত্র।


৫. বৈদিক যুগের ক’টি ভাগ ও কী কী?

Ans: বৈদিক যুগের দুটি ভাগ। আদি বৈদিক যুগ ও পরবর্তী বৈদিক যুগ।


৬. ‘রাজা’ কথার আক্ষরিক অর্থ কী?

Ans: ‘রাজা’ কথার আক্ষরিক অর্থ নেতা।


৭. মহাস্থানগড় কোথায় অবস্থিত?

Ans: মহাস্থানগড় বাংলাদেশের বাগুড়া জেলায় অবস্থিত।


৮. ত্রিপিটক কোন্ ভাষায় লেখা হয়েছে?

Ans: ত্রিপিটক পালি ভাষায় লেখা হয়েছে।


৯. গৌতম বুদ্ধ কোন্ নগরে মারা যান?

Ans: গৌতম বুদ্ধ কুশি নগরে মারা যান।


১০. মেসোপটেমিয়া শব্দের অর্থ কী?

Ans: দুই নদীর মধ্যবর্তী দেশ


১১. পাণিনি রচিত পুস্তকটির নাম কী?

Ans: অষ্টাধয়ী


১২. কে প্রথম শূন্যের ব্যবহার করেন?

Ans: সংখ্যা হিসেবে প্রথম শূন্যের ব্যবহার করেন আর্যভট্ট।


১৩. সঙ্গম সাহিত্য কাকে বলে?

Ans: দক্ষিণ ভারতে তামিল সাহিত্যকে বলা হয় সঙ্গম সাহিত্য।


১৪. কালিদাস রচিত দুটি বিখ্যাত নাটকের নাম লেখো।

Ans: অভিজ্ঞান শকুন্তলা এবং মালকা বিগাগ্নিমিত্র।


৪) প্রশ্নগুলি দু – তিনটি বাক্যে উত্তর দাও:


১. ঋগ্‌বৈদিক যুগের চতুর্বর্ণের পরিচয় দাও।

Ans: ঋগবেদের শেষের দিকে সমাজে ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য ও শূদ্র শ্রেণির অস্তিত্বের কথা বলা হয়। ব্রাহ্মণরা যাগযজ্ঞ, পড়াশোনা ও শিক্ষাদানের কাজ করত। ক্ষত্রিয়রা রাজ্যশাসন এবং প্রজাদের নিরাপত্তার দায়িত্ব নিত। বৈশ্যরা কৃষিকাজ, পশুপালন ও ব্যাবসাবাণিজ্যের কাজে যুক্ত থাকত এবং শূদ্ররা ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয় ও বৈশ্যদের সেবায় নিযুক্ত থাকত।


২. আর্যসত্যের পরিচয় দাও।

Ans: বৌদ্ধধর্মের প্রবর্তক গৌতম বুদ্ধ তাঁর শিষ্যদের দুঃখের কারণ কী, কীভাবে সেই দুঃখ থেকে মুক্তি পাওয়া যায় — এই প্রশ্নগুলির উত্তরে চারটি উপদেশ দেন। প্রতিটি উপদেশকে বলা হয় আর্যসত্য। তাই এই চারটি উপদেশ একসঙ্গে চতুরার্যসত্য নামে অভিহিত হয়।


৩. ‘ত্রিরত্ন’ কী?

Ans: সৎ বিশ্বাস, সৎ জ্ঞান ও সৎ আচরণের উপরে জৈনরা জোর দিতেন। এই তিনটিকে একসঙ্গে জৈন ধর্মের ত্রিরত্ন বলা হত। বৌদ্ধ ধর্মে গৌতম বুদ্ধ প্রধান ব্যক্তি। তাঁর প্রচার করা ধর্মই বৌদ্ধ ধর্ম। বৌদ্ধ ধর্ম প্রচারের দায়িত্ব বৌদ্ধ সংঘের। এই তিন মিলে হয় বুদ্ধ – ধৰ্ম্ম – সংঘ। এই তিনটি বৌদ্ধ ধর্মের ত্রিরত্ন।


৪. ‘অগ্রহার ব্যবস্থা’ কী?

Ans: গুপ্ত ও গুপ্তোত্তরকালে বৌদ্ধ বিহার বা অন্যান্য মন্দির বা ব্রাহ্মণকে যে নিষ্কর জমিদান করা হত, তা অগ্রহার ব্যবস্থা নামে পরিচিত। এই ব্যবস্থায় বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই জমি অর্থের বিনিময়ে কেনা হত এবং পরে তা দান করা হত। এই ধরনের জমি হস্তান্তর করা যেত না, কিন্তু বংশপরম্পরায় ভোগ করা যেত।


৫. মিশরকে ‘নীলনদের দান’ বলা হয় কেন?

Ans: মিশর নীলনদের নিম্ন অববাহিকায় অবস্থিত একটি দেশ। মরু প্রকৃতির জলবায়ুর প্রভাবে এখানে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ খুবই অল্প। কিন্তু দেশের মধ্য দিয়ে নীলনদ প্রবাহিত হওয়ায় মিশর সম্পূর্ণ মরুভূমিতে পরিণত হতে পারেনি। তাই মিশরকে নীলনদের দান বলা হয়।


৬. গুরুকুল ব্যবস্থা বলতে কী বোঝো?

Ans: বৈদিক যুগের শিক্ষাব্যবস্থায় ছাত্রদের গুরুগৃহে থেকে পড়াশোনা করতে হত। তাই এই শিক্ষাব্যবস্থাকে বলা হয় গুরুকুল শিক্ষাব্যবস্থা।


৭. সংখ্যায়ন কী?

Ans: ভারতীয় উপমহাদেশে গণিতচর্চার ব্যাপক প্রচলন ছিল এবং জৈন ও বৌদ্ধ পণ্ডিতরাও গণিতচর্চা করতেন। বৌদ্ধদের গণিতবিজ্ঞান বিষয়টি তৈরি হয়েছিল পাটিগণিত, বীজগণিত ও জ্যামিতি নিয়ে। জৈনরা এই গণিতবিদ্যাকে বলতেন সংখ্যায়ন বা সাংখ্যায়ন।


৮. অশোকের ধর্ম কী?

Ans:সম্রাট অশোক ধর্মপ্রচার করেছিলেন। অশোকের ত্রয়োদশ লিপিতে ধর্ম কথাটির উল্লেখ আছে। ধর্মের মূল কথা ছিল হিংসা না করা, প্রাণী হত্যা বন্ধ করা, দয়া, দান, সত্য কথা বলা এবং পিতা-মাতাসহ সব গুরুজনদের নির্দেশ মেনে চলা।


৯. নগররাষ্ট্র বা পলিশ কী?

Ans: প্রাচীন গ্রীসে পাহাড়ে ঘেরা অনেকগুলি ছোট ছোট রাষ্ট্র গড়ে উঠেছিল। এই ছোট ছোট রাষ্ট্রকেই বলা হতো নগররাষ্ট্র বা পলিশ। দুটি বিখ্যাত পলিশ হলো এথেন্স এবং স্পাটা।


১০. আর্যভট্ট রচিত দুটি বিখ্যাত গ্রন্থের নাম লেখো।

Ans: গুপ্তযুগের বিখ্যাত জ্যোতির্বিদ ও গণিতবিদ ছিলেন আর্যভট্ট। তাঁর দুটি বিখ্যাত গ্রন্থ হলো আর্যভট্টীয় এবং সূর্য সিদ্ধান্ত।


৫) প্রশ্নগুলির চার – পাঁচটি বাক্যে উত্তর দাও:


১. টীকা লেখো : ইন্ডিকা।

Ans: চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যের আমলে গ্রিক শাসক সেলিউকাসের রাষ্ট্রদূতরূপে মেগাস্থিনিস পাটলিপুত্রে আসেন। এই সময় ভারত সম্পর্কে তিনি তাঁর বিবরণ লিপিবদ্ধ করেন ‘ইন্ডিকা’ নামক গ্রন্থে। যদিও মূল গ্রন্থটির অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি, তবে গ্রন্থটির নানা অংশ পাওয়া গেছে পরবর্তী গ্রিক ও রোমান লেখকদের বিবরণে। এগুলি থেকে ভারতীয় ইতিহাসের নানা তথ্য পাওয়া যায়। এর মধ্যে বিশেষ উল্লেখযোগ্য হল পাটলিপুত্র নগর সম্পর্কিত তথ্য।


২. গুহাবাস কী?

Ans: মৌর্য সম্রাট অশোক ও তাঁর পরবর্তী মৌর্য সম্রাটরা আজীবিকদের জন্য পাহাড় কেটে কৃত্রিম গুহা বানাতেন। এগুলি গুহাবাস নামে পরিচিত। এইসব গুহায় সন্ন্যাসীরা বসবাস করতেন।


৩. ষোড়শ মহাজনপদের আমলে নগরগুলির অবস্থা কেমন ছিল?

Ans: ষোড়শ মহাজনপদের আমলে নগরগুলি আকারে গ্রামীণ বসতির তুলনায় বড়ো ছিল। প্রধানত শাসন ও ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত লোকেরা নগরে বাস করতেন। তবে এরা নিজেদের খাদ্য নিজেরা উৎপাদন করতে পারতেন না। তাই খাদ্যের জন্য তাঁদের গ্রামের ওপর নির্ভরশীল থাকতে হত।


৪. টীকা লেখো : দশরাজার যুদ্ধ।

Ans: যুদ্ধের কথা ঋকবেদে অনেক আছে। তার মধ্যে বিখ্যাত হলো দশ রাজার যুদ্ধ। ভরত গোষ্ঠীর রাজা ছিলেন সুদাস। তাঁর সঙ্গে অন্যান্য দশটি গোষ্ঠীর রাজাদের যুদ্ধ হয়েছিল। সুদাস দশ রাজার জোটকে হারিয়ে দিয়েছিলেন। এর ফলে ভরত গোষ্ঠীর রাজনৈতিক ক্ষমতা বেড়েছিল। নদীর ওপর একটি বাঁধ ভেঙে দিয়েছিলেন সুদাস। হয়তো নদীর জলের উপর অধিকার বজায় রাখার জন্যই এমনটা করা হয়েছিল। এই যুদ্ধের সঙ্গে পরবর্তীকালে মহাভারতের কুরুক্ষেত্র যুদ্ধের কিছুটা মিল রয়েছে।


৫. অশোকের জীবনে কলিঙ্গ যুদ্ধের প্রভাব লেখো।

Ans: কলিঙ্গ যুদ্ধের ভয়াবহতার ফলে অশোকের মনের পরিবর্তন ঘটে। এরপর থেকেই তিনি প্রজাদের ঐক্যবদ্ধ করতে থাকেন। এই যুদ্ধের পর অশোক অন্য কোনো যুদ্ধ করেননি, বরং বৌদ্ধধর্মের দ্বারা তিনি প্রভাবিত হয়েছিলেন। তিনি প্রজাদের মধ্যে ‘ধম্ম’ নীতি প্রচার করেন, যার মূলকথা ছিল অহিংসা, প্রাণীহত্যা বন্ধ, দয়া, দান, সত্যকথা বলা এবং গুরুজনদের মেনে চলা।


৬. চতুরাশ্রম প্রথা কী?

Ans: আর্যদের সমগ্র জীবন ছিল ছকে বাঁধা চারটি পর্যায়ে বিভক্ত – ব্রহ্মচার্য, গ্রাহস্থ, বানপ্রস্থ এবং সন্ন্যাস। ব্রহ্মচার্য পর্যায়ে শিষ্য বা ছাত্ররা গুরুগৃহে থেকে পড়াশোনা করতো। গ্রাহস্থ পর্যায়ে পড়াশোনা শেষে ছাত্ররা নিজের বাড়িতে ফিরে এসে বিবাহ করে সংসার পালন করতো। বানপ্রস্থ পর্যায়ে বনবাসী জীবন পালন করতে হতো এবং সন্ন্যাস পর্যায়ে বনে কুটির তৈরি করে বাকি জীবন সেখানে ঈশ্বর চিন্তায় কাটাতে হতো। এই চতুরাশ্রম প্রথা শূদ্রক ছাড়া বাকি তিন বর্ণের ক্ষেত্রে চালু ছিল।


৭. মৌর্য সম্রাটরা গুপ্তচর কেন নিয়োগ করতো?

Ans: মৌর্য সম্রাটরাই প্রথম গুপ্তচর নিয়োগ করেছিলেন। গুপ্তচররা সন্ন্যাসী, ছাত্র, ব্যবসায়ী, ভিখারিনী প্রভৃতি অনেক ছদ্মবেশ ধরে কাজ করতো। গুপ্তচরদের মাধ্যমে সাম্রাজ্যের সব রকম খবর সম্রাটের কাছে চলে আসতো। এর মূল কারণ ছিল সাম্রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের খোঁজখবর আনা, অচেনা বিদেশী বা সন্দেহজনক লোকের উপর নজর রাখা এবং রাজকর্মচারী ও রাজপুত্রদের উপর নজর রাখা।


৬) প্রশ্নগুলির আট – দশটি বাক্যে উত্তর দাও:


১. মৌর্য সাম্রাজ্যের পতনের কারণগুলি লেখো।

Ans: মৌর্য সাম্রাজ্যের পতনের মূল কারণগুলি ছিলঃ- 

i) ব্রাহ্মণ শ্রেণির ক্ষোভঃ- সম্রাট অশোকের ‘ধম্ম’ নীতির প্রয়োগ, যেমন পশুবলি নিষিদ্ধকরণ, সকলের ক্ষেত্রে দণ্ডসমতা ও ব্যবহারসমতা নীতির প্রয়োগ এবং ধর্মমহামাত্র নামক কর্মচারী নিয়োগ, ব্রাহ্মণ সম্প্রদায়ের সম্মান ও বৃত্তিগত অধিকারকে ক্ষুণ্ন করেছিল। এতে ব্রাহ্মণরা ক্ষুব্ধ হয়। 

ii) অশোক অনুসৃত অহিংস নীতিঃ- অশোক তাঁর অহিংস নীতির কারণে যুদ্ধ ত্যাগ করে সেনাবাহিনীকে দুর্বল করে তোলেন। ফলে তাঁর সেনাবাহিনী অভ্যন্তরীণ বিদ্রোহ ও বিদেশি শত্রুর আক্রমণ রোধে ব্যর্থ হয়। 

iii) সাম্রাজ্যের বিশালতা ও প্রশাসনিক দুর্বলতাঃ- বিশাল সাম্রাজ্যকে কেন্দ্রীয় প্রশাসন ঠিকমতো নিয়ন্ত্রণ করতে পারত না, যার ফলে আঞ্চলিক বিচ্ছিন্নতা বৃদ্ধি পায়। আমলাতন্ত্রের আনুগত্য রাজার প্রতি হওয়ায় রাজার পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে আমলাদেরও পরিবর্তন ঘটত, যা রাষ্ট্রের প্রশাসনিক ভিত্তিকে দুর্বল করে তুলেছিল। 

iv) অর্থনৈতিক সংকটঃ- অশোকের জনকল্যাণমূলক কর্মকাণ্ড, স্তম্ভ নির্মাণ এবং মৌর্য সামরিক বাহিনী ও কর্মচারীদের বেতন খাতে বিপুল পরিমাণ অর্থব্যয় হয়। ব্যয়ের অনুপাতে রাজকোষে পর্যাপ্ত রাজস্ব জমা না হওয়ায় পরবর্তী মৌর্য রাজাদের আমলে তীব্র অর্থনৈতিক সংকট দেখা দেয়, যা সাম্রাজ্যের সুস্থিতিকে বিপন্ন করে। 

v) অশোকের উত্তরাধিকারীদের দুর্বলতাঃ-  অশোকের দুর্বল উত্তরাধিকারীরা মৌর্য সাম্রাজ্যকে হীনবল করে তোলে। অভ্যন্তরীণ দুর্বলতার সুযোগে ব্যাকট্রিয় গ্রিক জাতি উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত দিয়ে ভারতে প্রবেশ করে। এই বিদেশি আক্রমণের সুযোগ নিয়ে সেনাপতি পুষ্যমিত্র শুঙ্গ শেষ মৌর্য সম্রাট বৃহদ্রথকে হত্যা করে সিংহাসন দখল করলে মৌর্য সাম্রাজ্যের অবসান ঘটে।


২. প্রাচীন ভারতে পরিবেশ চিন্তা কেমন ছিল?

Ans: প্রাচীন ভারতে পরিবেশ-চিন্তার মূল বিষয় ছিল প্রকৃতি ও তার সংরক্ষণ।

i) বিষয়বস্তুঃ- প্রাচীন ভারতে পরিবেশ-চিন্তার মূল বিষয় ছিল বন ও বনের পরিবেশ, পশুপাখি এবং গাছপালা। 

ii) বন ও বন্যপ্রাণী সংরক্ষণঃ- প্রাচীন ভারতে বনাঞ্চলের ক্ষতি করলে কড়া শাস্তির বিধান দেওয়া হত। তা ছাড়া বনজঙ্গল ও বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হত। 

iii) বৃক্ষচ্ছেদন রোধঃ- খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতকে কৃষিকাজের পাশাপাশি নগরের উন্নতি ঘটলে জঙ্গল বা অরণ্য কাটা শুরু হয়। তাই বিভিন্ন সময়ে গাছ বাঁচানোর নানা উপায় হিসেবে বৃক্ষপূজার প্রচলন হয় এবং বৃক্ষচ্ছেদন রোধ করা হয়। এই চিন্তা ভাবনাগুলি প্রাচীন ভারতীয়দের পরিবেশ সচেতনতার পরিচায়ক ছিল।


৩. প্রাচীন ভারতে চিকিৎসাশাস্ত্র সম্পর্কে সংক্ষেপে লেখো।

Ans: প্রাচীনকাল থেকেই ভারতীয় উপমহাদেশে চিকিৎসাশাস্ত্র সম্পর্কিত গ্রন্থ রচিত হতে থাকে।

i) ব্রাহ্মণ ও বৌদ্ধদের ভূমিকাঃ- ব্রাহ্মণ ও বৌদ্ধ ধর্মগুরুরা তাঁদের নানা লেখায় ওষুধ ও অস্ত্রোপচারের উল্লেখ করেছেন। চিকিৎসাশাস্ত্র বিষয়ক দুটি গুরুত্বপূর্ণ বই হল ‘চরক সংহিতা’ ও ‘শুশ্রুত সংহিতা’। চিকিৎসার গুরুত্বের কারণেই প্রাচীন ভারতে চিকিৎসাশাস্ত্রকে বলা হত ‘উপবেদ’।

ii) গুপ্তযুগের চিকিৎসাশাস্ত্রঃ- গুপ্ত আমলেও চিকিৎসা বিষয়ক বই লেখা হত। এইসব বইয়ের অন্যতম লেখক ছিলেন বাগভট। 

iii) পশুচিকিৎসাঃ-  গুপ্ত ও গুপ্তোত্তরকালে পশুচিকিৎসা সম্পর্কিত বইও লেখা হতে থাকে, যা প্রাচীন ভারতীয় সমাজের সামগ্রিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থার একটি দিক নির্দেশ করে। 

iv) চিকিৎসাবিজ্ঞান চর্চায় সমস্যাঃ- সমাজে জাতিভেদ প্রথার কঠোরতার ফলে চিকিৎসাবিজ্ঞান চর্চায় নানা সমস্যা দেখা দিয়েছিল। প্রচলিত বর্ণাশ্রম প্রথার সঙ্গে চিকিৎসাবিদ্যার বিরোধিতা তৈরি হয়।


৪. টীকা লেখো : নালন্দা মহাবিহার।

Ans: নালন্দা মহাবিহার ছিল প্রাচীন ভারতের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা ও বৌদ্ধধর্ম চর্চার কেন্দ্র। 

i) পরিচালনা ও নিয়ম কানুনঃ- এটি বৌদ্ধ ভিক্ষুদের দ্বারা পরিচালিত হতো এবং এখানে কঠোর নিয়ম-কানুন মেনে চলা হতো। শিক্ষার্থীদের এখানে আবাসিক সুবিধা প্রদান করা হতো। 

ii) শিক্ষা পদ্ধতি বা শিক্ষাদান পদ্ধতিঃ- নালন্দায় কেবল বৌদ্ধ ধর্মই নয়, দর্শন, যুক্তিবিদ্যা, ব্যাকরণ, জ্যোতির্বিদ্যা, চিকিৎসাশাস্ত্র সহ বিভিন্ন বিষয়ে উচ্চশিক্ষা প্রদান করা হতো। 

iii) পাঠ্য বিষয়ঃ- এই মহাবিহারে উল্লেখিত বিষয়গুলি ছাড়াও বিভিন্ন লৌকিক ও আধ্যাত্মিক জ্ঞান প্রদান করা হতো, যা এটিকে একটি বহুমুখী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পরিণত করেছিল। 

iv) গুরুত্বঃ- নালন্দা বিশ্বজুড়ে বহু ছাত্র ও পণ্ডিতদের আকর্ষণ করত। এটি বৌদ্ধধর্মের প্রসারে এবং জ্ঞানচর্চার কেন্দ্র হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল এবং এর খ্যাতি সুদূর চীন ও অন্যান্য এশীয় দেশেও ছড়িয়ে পড়েছিল।


৫. টীকা লেখো : তক্ষিলা মহাবিহার।

Ans: তক্ষিলা মহাবিহার প্রাচীন ভারতের আরও একটি বিখ্যাত শিক্ষা কেন্দ্র ছিল, যা বর্তমান পাকিস্তানের রাওয়ালপিন্ডির কাছে অবস্থিত। 

i) পরিচালনা ও নিয়ম কানুনঃ- এই মহাবিহারটি রাজকীয় পৃষ্ঠপোষকতায় পরিচালিত হতো এবং এটি ছিল একটি স্বায়ত্তশাসিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এখানে ছাত্ররা তাদের পছন্দের বিষয়ে পারদর্শী শিক্ষকদের কাছে শিক্ষা গ্রহণ করত। 

ii) শিক্ষা পদ্ধতি বা শিক্ষাদান পদ্ধতিঃ- তক্ষিলাতে শুধুমাত্র ধর্মীয় শিক্ষা নয়, বেদ, ব্যাকরণ, আয়ুর্বেদ (চিকিৎসা), ধনুর্বিদ্যা, সামরিক বিজ্ঞান, রাজনীতি, জ্যোতির্বিদ্যা এবং অন্যান্য ব্যবহারিক কলাসহ বিভিন্ন বিষয়ে শিক্ষা দেওয়া হতো। 

iii) পাঠ্য বিষয়ঃ- উল্লেখিত বিষয়গুলি ছাড়াও বিভিন্ন লৌকিক ও আধ্যাত্মিক জ্ঞান প্রদান করা হতো, যা শিক্ষার্থীদের সামগ্রিক বিকাশে সহায়ক ছিল। 

iv) গুরুত্বঃ- চাণক্য, জীবক, পাণিনি প্রমুখ বিখ্যাত ব্যক্তিরা এখানে শিক্ষা গ্রহণ করেছিলেন বলে কথিত আছে। এটি বহু দেশের শিক্ষার্থীদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ গন্তব্য ছিল এবং প্রাচীন ভারতের জ্ঞানচর্চার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিল।

File Name: Class 6 3rd Unit Test History Questions Pdf

Language: Bengali

Page No: 8

Size: 309Kbs

Download: Click Here to Download

No comments:

Post a Comment